দুর্গাপুরঃ ঘুম থেকে উঠে মাকে ফোন করেও মেলেনি কোনও উত্তর। তাই বাড়ি ফিরে এসে দরজা ভাঙতেই ঘরের মধ্যে দেখলো বাবার ঝুলন্ত দেহ। আর মায়ের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। যা দেখে হতবাক ছেলে। শুক্রবার সাতসকালের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডালের উখড়ার শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারির ভূঁইয়া পাড়ায়। মৃতদের নাম নীলকন্ঠ বাউরি (৪২) ও লিলি বাউরি (৩৫)। ঘটনার খবর দেওয়া হয় অন্ডাল থানায়। পুলিশ এসে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়। যে ঘর থেকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ঘরের দেওয়ালে একটা লেখা পাওয়া যায়। তাতে বলা হয়েছে “আমরা একসাথে যাব”।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পরে জানতে পারে যে, দীর্ঘদিন ধরেই স্বামী নীলকন্ঠ বাউরির সঙ্গে স্ত্রী লিলি বাউরির পারিবারিক বিবাদ লেগেই থাকতো। কোনও কারণে সেই বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছায় বৃহস্পতিবার রাতে। তখনই নীলকন্ঠ বাউরি দেওয়ালে ‘আমরা একসাথে যাব’ লিখে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরে সে নিজে ঘরের মধ্যে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন।
এই প্রসঙ্গে মৃত দম্পতির ছেলে রোহিত বাউরির দাবি, সে পাশে মামার বাড়িতে রাতে ঘুমিয়ে ছিল। এদিন সকালে সে ঘুম থেকে উঠেই মায়ের মোবাইলে ফোন করে। কিন্তু মা তার ফোন ধরেনি। মায়ের সঙ্গে কথা না হওয়ায় সে বাড়িতে আসে। তখন রোহিত দেখে বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরেও বাড়ির ভেতর থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের সাহায্য চায়। এরপর দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতেই সবাই হতবাক হয়ে যান। তারা দেখেন ঘরের মধ্যে নীলকন্ঠ বাউরি গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। লিলি বাউরির দেহ বিছানায় পড়ে আছে। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ময়নাতদন্তের পরে প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ জানতে পারে যে, লিলি বাউরিকে গলায় দড়ি জাতীয় কোন কিছু পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে নীলকন্ঠ বাউরি। তারপর সে দেওয়ালে লিখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা না হলেও, এই ঘটনায় পুলিশ দুটি আলাদা আলাদা করে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করেছে।