সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: চলতি বছর বর্ষাতেও শক্তিগড় এবং অশোকনগর জলমগ্ন(Waterlogging) হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। এই আশঙ্কার মূল কারণ, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পিডব্লিউডি মোড় এলাকায় অর্ধসমাপ্ত নিকাশিনালার কাজ। প্রায় তিন মাস ধরে ওই কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সূত্রের খবর, ঠিকাদার সংস্থা টাকার অভাবে মাঝপথে কাজ বন্ধ রেখে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। সাধারণত জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে উত্তরবঙ্গে বর্ষা শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে বর্ষার আগে নিকাশিনালার কাজ আদৌ শেষ করা সম্ভব কি না, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
শিলিগুড়ি(Siliguri) পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, ‘সোমবার থেকে কাজ হবে। যে পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছিল, তা কিছুটা কম পড়েছিল। সেটা নিয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়া, ইদের জন্য ঠিকাদার সংস্থার কিছু কর্মী ছুটিতে ছিলেন। চলতি সপ্তাহ থেকে দ্রুতগতিতে কাজ শুরু হবে।’
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি পুরনিগমের তরফে প্রায় ১ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা খরচ করে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নিকাশিনালা নির্মাণ হচ্ছে। পিডব্লিউডি মোড়ের কাছে পরিকাঠামো গড়ে তুলে বর্ধমান রোডের নীচ দিয়ে পাইপের মাধ্যমে শক্তিগড় ও অশোকনগরের নিকাশিনালার জল বের করার পরিকল্পনা হয়েছিল। প্রায় ৬ মাস আগে থেকে কাজ শুরু হয়। পিডব্লিউডি মোড়ের দুই পাশে যার জন্য কাজ চলছিল। কিন্তু শক্তিগড় উপরকলোনি এলাকার দিকে প্রায় ৩ মাস ধরে কাজটি বন্ধ। এর ফলে পিডব্লিউডি মোড়ের কাছে বেশ কিছু দোকানদারের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের যানবাহন নিয়ে অনেকটা দূর ঘুরে যেতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মেয়র অবশ্য বলছেন, ‘পাশে একটি সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখান দিয়ে এখন অনায়াসে বাইক, স্কুটার চলাচল করতে পারছে।’
পিডব্লিউডি মোড় এলাকার বাসিন্দা অভিষেক চক্রবর্তীর কথায়, ‘যখন কাজ শুরু হয়, ভেবেছিলাম হয়তো এবার শক্তিগড়ে বৃষ্টির জল জমার সমস্যা মিটবে। কিন্তু মাঝপথে টাকার জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। দ্রুত কাজ শুরু না হলে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও এলাকা জলে ভাসবে।’
এদিকে, শক্তিগড় স্কুলের মোড় থেকে পিডব্লিউডি মোড় পর্যন্ত নিকাশিনালা তৈরি করা হয়েছিল। ওই নালার নির্মাণ নিয়েও বিস্তর অভিযোগ। শোনা যায়, পিডব্লিউডি মোড়ের দিক দিয়ে নালার জল বের করার পরিকল্পনা থাকলেও সেই দিকটি উঁচু করে ফেলা হয়েছে। সেখানে শক্তিগড়ের দিকে নালার ঢাল হয়ে রয়েছে। ফলে শক্তিগড়ের নালার জল বের হওয়ার বদলে উলটে এলাকায় ঢুকছে। শক্তিগড়ের বাসিন্দা অভিজিৎ সরকারের কথায়, ‘যে পরিকল্পনা করে কাজ এগোচ্ছে, তাতে আগামীতে সুফল মিলবে কি না, জানি না। কিন্তু নালা তৈরি ও সংস্কারের ক্ষেত্রে আগের কাজগুলোতে অনিয়ম হয়েছে। প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে জল জমার সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হতে সময় লেগে যাচ্ছে বছরের পর বছর।’
