কলকাতা: আজ ২৫শে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। রাজ্য সহ দেশ বিদেশে পালিত হচ্ছে রবীন্দ্র জয়ন্তী। মঙ্গলবার কলকাতার এক বেসরকারি স্কুলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করা হয়। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে চীন দেশের সু সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন যাত্রার ১০০ বছর হওয়ার আগে কলকাতা সল্টলেকের সেই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলেন তারা তাদের পাঠক্রমে চিনা ভাষাকে তৃতীয় ভাষা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করবে। কলকাতায় চিনা রাস্ট্রদূত ঝা লিয়ো এর উপস্থিতিতে চিনা ভাষায় রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে, চিনা ড্রাগন নাচের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আজ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিনা ভাষা শেখানোর পথ চলা শুরু হল।
কলকাতায় নিযুক্ত চিনের কনসাল জেনারেল ঝা লিয়ো বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ জন্মবার্ষিকীর শুভ লগ্নে এটা একটা দারুণ ভাবনা। স্কুলে চাইনিজ ভাষা শিখবে ছাত্রছাত্রীরা। এই উদ্যোগ ভারত-চিন সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। আরও মানুষ চাইনিজ ভাষা শেখার ব্যাপারে উৎসাহিত হবেন।‘
এদিকে, স্কুলের ভাইস-প্রিন্সিপাল লুসিয়া গুপ্তা বলেন, ‘স্কুলের পঞ্চম থকে অষ্টম শ্রেণিতে থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে চাইনিজ ভাষা যুক্ত করা হল। এটা করতে পেরে আমরাও দারুণ উৎসাহিত। পরবর্তী কালে স্কুলে বিদেশি ভাষা হিসাবে ফরাসি, জার্মান ভাষা শেখানোর ব্যাপারে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।‘
চীনা অধ্যাপক দং ইউছেন লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ বিশ্বসভার মহান কবি। চিনা জনগণের মধ্যে তিনি প্রিয়তম কবি ও মহান বন্ধু। চিনা পাঠকরা তাঁর সাহিত্য ভালোবাসেন। রবীন্দ্র রচনাবলির প্রায় সবই চিনা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ২০০১ সালে প্রথম তাঁর সম্পূর্ণ লেখা নিয়ে রচনাবলি প্রকাশিত হয়েছে সেখানকার শিক্ষা প্রকাশনালয় থেকে। ২০০৫ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ও গল্প প্রকাশিত হয়েছে হুয়া-ওয়েন প্রকাশনালয় থেকে। সমগ্র উপন্যাস ও গল্পের অনুবাদ করা হয়েছিল বাংলা লেখা থেকে। ২০০৮ সালে বেইজিং বিদেশি ভাষা শিক্ষাদান ও গবেষণা প্রকাশনালয় রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রকাশ করেছে। চীনা আধুনিক সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব প্রসঙ্গে বলা যাক। চীনা আধুনিক সাহিত্যের বিকাশে রবীন্দ্রনাথের খুব প্রভাব পড়েছিল। ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ চিনে গিয়েছিলেন। ভ্রমণ করেছিলেন ৪৯ দিন। বক্তৃতা দিয়েছিলেন নানা জায়গায়। তখন এক উত্তাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে চিন। আর পরিবর্তনের সেই ঝোড়ো হাওয়ায় কী বলবেন কবি, সেই দ্বিধা ছিল তাঁর প্রথম বক্তৃতাতেই: ‘’আপনাদের ধর্ম এবং প্রথা সম্পর্কে এত বিরোধী মতামতের কথা আমি পড়েছি যে ভাবছিলাম এঁরা আমাকে কিসের জন্য আমন্ত্রণ করেছেন, এঁদের কল্যাণের জন্য কোন্ বাণী বহন করে নিয়ে যাওয়া আমার কর্তব্য।‘