উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। দীর্ঘ প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর মঙ্গলবার রাতে তাঁর গ্রেপ্তারির খবর জানান বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সের ইডির আধিকারিকরা। ভুয়ো সংস্থা খুলে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়া তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্তে কুন্তল ঘোষ, গোপাল দলপতি, তাপস মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর উঠে আসে কালীঘাটের কাকুর নাম। কুন্তলের মুখে তাঁরা এই নাম শুনেছিলেন বলে জানিয়েছেন তাপসবাবু। কালীঘাটের কাকু কে? তাঁর পরিচয় কী? তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয় রাজ্য রাজনীতিতে। পরবর্তীতে কালীঘাটের এই কাকুর নাম ও পরিচয় জানা যায়। তিনি হলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সুজয়বাবু অভিষেকের দপ্তরের পুরানো কর্মী। নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ বিভিন্ন সময়ে কালীঘাটের এই কাকুর কাছে মোটা অংকের টাকা পাঠাতেন বলে তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছিলেন গোপাল দলপতি ও তাপস মণ্ডল। পরবর্তীতে কালীঘাটের কাকুর বাড়িতে একাধিকবার তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই ও ইডি। এর আগে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেন তিনি। এবারই প্রথমবার ইডি দপ্তরে হাজিরা দিলেন কালিঘাটের কাকু। গত ২০ মে তাঁর বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি চালায় ইডি। বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয় তাঁর বাড়ি থেকে। ইডি জানতে পারে তিনটি কোম্পানির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছেন সুজয়কৃষ্ণ বাবু। এই সব সংস্থায় তাঁর অংশীদারিত্ব থাকলেও তিনি অস্বীকার করেছেন বারবার।
তল্লাশিতে উদ্ধার হওয়া নথির ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার সুজয়কৃষ্ণবাবুকে প্রথমবার তলব করে ইডি। আজ বেলা ১১.৩০ মিনিট নাগাদ বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন তিনি। ইডি সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের জেরায় একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। বকলমে তিনি যে ভুয়ো সংস্থা চালাতেন সেই সংস্থা সুজয়কৃষ্ণ বাবুর সামনে পেশ করা হলে অস্বীকার করেন তিনি। এমনকী শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যবসায় সুজয়কৃষ্ণের বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। এদিন নানা ভাবে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন তিনি। এর পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নেন ইডি কর্তারা।
যদিও এর আগে তিনি নিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন সুজয়কৃষ্ণবাবু। সুজয়কৃষ্ণবাবুর দাবি, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরের পুরনো কর্মী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফাঁসাতে না পেরে তাঁকে নিয়ে টানাটানি করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।