কলকাতা ও নাগরাকাটা: শেষপর্যন্ত ১৬ শতাংশ বোনাসই মেনে নিতে হল চা শ্রমিক ইউনিয়নগুলিকে। বৃহস্পতিবার বেশি রাতে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর হবে শুক্রবার। চা বাগান মালিক সমিতিগুলির যৌথ মঞ্চ কনসালটেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা বলেন, ‘২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের হাতে ১৬ শতাংশ হারে বোনাস তুলে দেওয়া হবে।’
বুধবার থেকে দফায় দফায় বৈঠক চলছিল কলকাতায় একটি বণিকসভার দপ্তরে। কিন্তু কিছুতেই সমাধানসূত্র মিলছিল না। বৃহস্পতিবারও বেলা ১১টা থেকে বৈঠক শুরু হয়। রাত ৯টা নাগাদ মিটিং স্থগিত রেখে নিজেরা আলোচনায় বসে মালিকপক্ষ। প্রাথমিকভাবেমালিকপক্ষ ১১.৫ শতাংশের বেশি বোনাস দিতে রাজি হচ্ছিল না।
কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নগুলি কোনও অবস্থাতেই ১৮ শতাংশের কমে বোনাস মানতে নারাজ ছিল। গত বছরও গভীর রাতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এবার অবশ্য মধ্যরাতের আগেই নিষ্পত্তি হল। দিনভর চা বাগান মালিকরা আলোচনার পর ১৫ শতাংশের প্রস্তাব দিলে শ্রমিক ইউনিয়নগুলি এক কথায় তা নস্যাৎ করে। শেষপর্যন্ত মালিকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর ১৬ শতাংশ বোনাস দিতে সম্মত হন। অনেক বাগবিতণ্ডার পর শ্রমিক ইউনিয়নগুলি সেই প্রস্তাব মেনে নেয়।
তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, ‘সমস্ত দিক বিবেচনা করে এই রফা করা হয়েছে।’ বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোজ টিগ্গার যুক্তি, ‘আমরা চাইনি বোনাসকে কেন্দ্র করে কোনও বাগান ফের বন্ধ হয়ে যাক। শ্রমিক ও মালিক, দু’পক্ষের স্বার্থ রক্ষার কথা চিন্তা করে সবক’টি সংগঠন মিলে এই মধ্যপন্থা বেছে নিতে হয়েছে।’ শুক্রবার চা বাগানের স্টাফ ও সাব-স্টাফদের বোনাস নির্ধারণেও বৈঠক হবে একই জায়গায়।
উত্তরবঙ্গের সমস্ত চা বাগান মালিক সংগঠন ও চা শ্রমিক ইউনিয়নগুলির প্রতিনিধিত্ব ছিল গত দু’দিনের বৈঠকে। রুগ্নতার কারণে প্রতি বছর এই চুক্তিতে বেশ কিছু বাগানকে ছাড় দেওয়া হয়। এবার যে বাগানগুলি ছাড়ের আওতায় থাকবে, তাদের তালিকা অবশ্য বৃহস্পতিবার পাওয়া যায়নি।