তুফানগঞ্জ: বুধবার রাত ফুরোলেই মা কালীর আরাধনা। তুফানগঞ্জ শহরের পুরোনো কালীপুজোর মধ্যে অন্যতম হল রানিরহাট বাজার এলাকার সর্বমঙ্গলা মায়ের পুজো। মা সর্বমঙ্গলা জাগ্রত বলে তুফানগঞ্জবাসীর অফুরন্ত বিশ্বাস রয়েছে। মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রথমদিকে মাটির প্রতিমায় পুজো শুরু হয়। তবে, বিগত ৬৭ বছর ধরে কষ্টিপাথরের প্রতিমা দিয়ে পুজো হয়ে আসছে। পুজো কমিটির সভাপতি জগবন্ধু সাহা বললেন, ‘বৃহস্পতিবার পুজো হয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে চলবে প্রসাদ বিতরণের পালা। কমিটির তরফ থেকে ভক্তদের পরিষেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।’
ভোর ৪টায় অন্ধকার ঘরে পুরোহিতের চোখ বাঁধা অবস্থায় রায়ডাক নদীর জল, ডাবের জল ও দুধ দিয়ে মাকে স্নান করিয়ে নৈবেদ্য ও ফলাহার দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। দুপুর ১২টায় মাকে লুচি, মিষ্টান্ন ভোগ দেওয়া হয়। এরপর ভক্তদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়। ভূর্জপত্রের ওপর কালীযন্ত্র ঘটের ভিতরে দিয়ে পুজো শুরু হয়। প্রায় এক দশক ধরে নিষ্ঠাসহকারে সর্বমঙ্গলা মায়ের পুজো সামলাচ্ছেন পুরোহিত দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অমাবস্যার রাতে বৈদিক মতে মাকে ২২ পদের ভোগ সাজিয়ে দেওয়া হয়। তাতে শাক, অন্ন, পুষ্পান্ন সহ নানা পদ থাকে। এরপর পুরোহিতের কাছে অলংকার তুলে দেওয়া হয়। নানা অলংকারে সেজে ওঠেন দেবী।
শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরোনো বাসিন্দারা এই পুজোর প্রচলন করেন। ধীরে ধীরে স্থানীয় মানুষজনের সাড়া মিলতে শুরু করে। পরবর্তীতে যাত্রাগানের মাধ্যমে টাকা তুলে বেনারস থেকে কষ্টিপাথরের প্রতিমা আনেন। স্থানীয় বাসিন্দা কমলকৃষ্ণ কুণ্ডু জানালেন, এই পুজো ঘিরে ছোটবেলার বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। শুধু শহরই নয়, নিম্ন অসম এলাকার বহু ভক্ত পুজোতে শামিল হন।