চন্দ্রনায়ায়ণ সাহা, রায়গঞ্জ: স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ‘ফোঁস’-এর পরেও প্রতিবাদে চিকিৎসকরা (Doctors Protest)। প্রতিটি মেডিকেল কলেজেই চলছে জুনিয়ার ডাক্তারদের প্রতিবাদ। চলছে কর্মবিরতিও। এরই মধ্যে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে (RG Kar Protest) অভিনব পথ নিলেন রায়গঞ্জের (Raiganj) একদল চিকিৎসক। প্রতিবাদস্বরূপ, তাঁদের প্রাইভেট চেম্বারে আসা রোগীদের প্রেসক্রিপশনে মেরে দিচ্ছেন একটি সিলমোহর। যে সিলে লেখা রয়েছে, ‘আরজি করের বিচার চাই, অপরাধচক্রের বিনাশ চাই। উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’
এমনই অভিনব কৌশলে চিকিৎসকরা প্রতিবাদের ভাষাকে উজ্জীবিত করছেন। এই প্রতিবাদ আন্দোলনে এগিয়ে এসেছেন উত্তর দিনাজপুরের ডাঃ উদয়ন কুণ্ডু, ডাঃ দেবব্রত রায়, ডাঃ অনিন্দ্য সরকার, ডাঃ শুভম মানি, ডাঃ ধীমান পাল, ডাঃ পার্থপ্রতিম ভদ্র, ডাঃ উৎপল পাঁজা সহ শহরের বেশিরভাগ চিকিৎসক। জানা গিয়েছে, একটি চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রায় ৩০ জন চিকিৎসক প্রতিবাদের একই পন্থা অবলম্বন করেছেন।
প্রতিবাদ জানাতে প্রেসক্রিপশনকে বেছে নিলেন কেন, জানতে চাইলে ডাঃ উদয়ন কুণ্ডু বলেন, ‘এর মধ্যে দিয়ে আমরা সকলে একজোট হয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করছি। দ্রুত এবং সঠিক বিচারের দাবিতে এই পথে আমরাও যে সঠিক বিচার চাইছি, তা তুলে ধরছি।’
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তনী ডাঃ দেবব্রত রায়ের উত্তর, ‘৯ অগাস্ট আরজি করে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিন্দনীয় এবং ক্ষমার অযোগ্য। ২১ দিন পার হয়ে গেল, এর ঘটনার কোনও সুফল দেখতে পাচ্ছি না। বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠছে। তাই আমি প্রতিবাদের এই ভাষা বেছে নিয়েছি।’ কী লেখা আছে প্রেসক্রিপশনে, জানতে চাইলে এক রোগী রমজান আলি বলেন, ‘আরজি করের বিচার চাই, অপরাধচক্রের বিনাশ চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ষণ করে হত্যা একটা অপরাধ। সেদিনের এমন ঘটনার পর আমরাও আমাদের সন্তানদের জন্য ভীত। ডাক্তারবাবুদের প্রতিবাদে আমারও সমর্থন আছে। বুঝতে পারছি না, আমাদের রাজ্যে এই ঘটনার শেষ কবে হবে?’
ডাঃ শুভম মানির দাবি, ‘প্রেসক্রিপশনে আলাদা সিলমোহর দিয়ে এমন প্রতিবাদ করায় একদিকে যেমন রোগীর পরিবারের সদস্যদের সমর্থন আছে, তেমনি তারা সমর্থনও জানাচ্ছেন। আমরাও ঘরে বসে থাকতে পারি না। যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে তা ভয়াবহ। অভিযুক্তদের চরম শাস্তি হওয়া উচিত।’ চিকিৎসকদের এই প্রতিবাদ সমর্থন করছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরাও। এমনই এক ওষুধ ব্যবসায়ী পার্থপ্রতিম অধিকারী প্রশ্ন তোলেন, ‘বিচারে কেন এত দেরি হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। এতেই ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভয় লাগছে। দেরি হচ্ছে দেখে খানিকটা আশাহত হয়ে পড়ছি। তবে প্রতিবাদ আন্দোলন আরও তীব্র হলে সঠিক ঘটনা উন্মোচিত হবেই।’