বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে কোনওরকমে সীমান্ত পেরিয়েছিলেন। ভারতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন পদ্মাপারের বাসিন্দারা। এদিকে, খবর চলে যায় পুলিশের কাছে। তারপর চার আত্মীয় সহ গৃহকর্তার ঠাঁই হল শ্রীঘরে। ঘটনাটি রায়গঞ্জের মহিপুর পঞ্চায়েতের মোহিনীগঞ্জের। ধৃত বাংলাদেশিদের নাম হৃদয় বর্মন, চুলা বর্মন, অন্তর বর্মন ও লিপু রায়। তাঁদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হওয়ার চেয়ে ভারতের জেলে থাকা নিরাপদ।
রায়গঞ্জ থানার পুলিশ এই স্পর্শকাতর বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেন, ‘পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
ওপারের সেই বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাংলাদেশে ঠাকুরগাঁও জেলায় একাধিক থানা ও ফাঁড়ি ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ যে করবেন, করার মতো কেউ এখন থানায় নেই। সমস্ত পুলিশ পলাতক। থানার মধ্যে পড়ে রয়েছে ভাঙচুর হওয়া আসবাবপত্র, টিভি ও গুরুত্বপূর্ণ নথি। সম্প্রতি তাঁদের প্রতিবেশী এক কিশোরকে মায়ের কোল থেকে কেড়ে সবার সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। ওই দৃশ্য দেখে তাঁরা আর বাড়িতে থাকার সাহস পাননি। এক ভারতীয় এজেন্টের মাধ্যমে সীমান্তের কাঁটাতার টপকে ভারতে চলে আসেন।
এদেশে থাকা তাঁদের আত্মীয়ের নাম অচিন্ত্য বর্মন। শনিবার গভীর রাতে অচিন্ত্যর পরিবারের তরফেই পুলিশকে ফোন করা হয়। ফোনে জানানো হয়, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় সেদেশে থাকা চার আত্মীয় তাঁদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের চোখের সামনে একের পর এক তরুণ, কিশোর-কিশোরীকে খুন করেছে সেদেশের দুষ্কৃতীরা। প্রাণের ভয়ে তাঁরা হেমতাবাদের চৈনগর বিওপি দিয়ে বৈধ কাগজ ছাড়াই ভারতে চলে এসেছেন। এরপরেই পুলিশ বাড়ির মালিক সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
বিএসএফের ৬১ নম্বর ব্যাটালিয়নের আধিকারিক দিলয়ার মিশ্রের বক্তব্য, ‘সীমান্তে ২৪ ঘণ্টা টহলদারি চলছে। ১০০ মিটার অন্তর একজন করে জওয়ান কর্তব্যরত রয়েছেন। তার মধ্যেও কীভাবে সীমান্ত টপকে বাংলাদেশিরা ভারতে প্রবেশ করল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।’