আলিপুরদুয়ার: অনলাইন গেম খেলা রুখতে ছেলে ও ছেলের সহপাঠীকে চড় মারা হয়েছিল। এর জেরে দমনপুর নর্থ পয়েন্ট এলাকায় ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল। মারধরের ঘটনার জেরে একই পরিবারের চারজন আহত হলেন। তাঁদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা এক তরুণী রয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার রাতের ঘটনা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আলিপুরদুয়ার জংশন ফাঁড়ির ওসি সোনা লামা বলেন, ‘দুই পরিবারের বিবাদের অভিযোগ পেয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়েছেন। আহতরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, একাদশ শ্রেণির দুই সহপাঠীর অনলাইন গেম খেলা নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। এক ব্যক্তি তাঁর ছেলে ও ছেলের সহপাঠীকে চড় মেরে অনলাইন গেম খেলতে বারণ করেন। এতে ছেলের সহপাঠী খেপে যায়। সে তার বাবা ও কাকাকে ঘটনাটি জানায়। সেই পরিবারের সদস্যরা অপর পরিবারের কাছে গিয়ে তাঁদের ছেলেকে চড় মারার কারণ জানতে চান। এনিয়ে ব্যাপক কথা কাটাকাটি হয়। সহপাঠী পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যদের হামলায় অন্য পড়ুয়া, তার বাবা ও সেই পড়ুয়ার অন্তঃসত্ত্বা দিদি সহ চারজন আহত হন। পড়ুয়ার বাবা ও পড়ুয়ার অন্তঃসত্ত্বা দিদির আঘাত গুরুতর। গ্রামবাসীরা পরিবারটির পাশে দাঁড়ান। গোটা ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হইচই শুরু হলে আলিপুরদুয়ার জংশন ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। অভিযুক্তদের আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয় ।
যে পরিবারের সদস্যরা মারধর খেয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সেই পড়ুয়ার ঠাকুরদা বলেন, ‘ওদের দুজনকে স্রেফ অনলাইন গেম খেলতে বারণ করা হয়েছিল। এজন্য হয়তো একটু শাসনও করা হয়েছিল। কিন্তু তার জেরে যে ঘটনা ঘটে গেল তাকে কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমার দুই ছেলে, নাতি ও নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাতনিকে মারধর করা হয়েছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি নিজেও হাতে আঘাত পেয়েছি।’ সোমবার দুপুরে অন্য পরিবারটির বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে কারও কোনও বক্তব্য মেলেনি।
এলাকাবাসীর একটি অংশের অবশ্য ধারণা, গোটা ঘটনার পিছনে পুরোনো পারিবারিক রেষারেষির একটি বিষয় রয়েছে। কেউ কেউ এর পিছনে রাজনীতির ছোঁয়াও দেখছেন।

