উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিশ্বায়নের এই যুগে বদলে যাচ্ছে প্রথাগত সম্পর্কের সংজ্ঞা। মানুষ বোধহয় ভরসা হারাচ্ছেন মানুষের ওপর। নিজেকেই বিয়ে করছেন কেউ, কেউবা খুজে নিচ্ছেন রোবট সঙ্গী। এই ঘটনাপ্রবাহে নতুন সংযোজন জাপানের ৪১ বছর বয়সি আকিহিকো কন্ডো(Akihiko Kondo)। নতুন সংযোজন বলার কারণ, সম্প্রতি নিজেদের বিবাহবার্ষিকীর কেকের ছবি তিনি পোস্ট করেছেন সমাজমাধ্যমে,যা ঘিরে আলোচনার শেষ নেই নেটিজেনদের। কী এমন আছে সেই ছবিতে? আছে অবাক করা টুইস্ট।
২০১৮ সালে আকিহিকো বিয়ে করেন এক কাল্পনিক চরিত্র, ভোকালয়েড(vocaloid) হ্যাটসুনে মিকুকে(Hatsune Miku)। প্রসঙ্গত, ভোকালয়েড হল এক ধরনের গানের ভয়েস সিন্থেসাইজার সফটওয়্যার এবং মিকু ২০০৭ সালে প্রকাশিত এক অ্যানিমেশন চরিত্র। এই কাল্পনিক স্ত্রীর সঙ্গেই কিন্তু তিনি কাটিয়ে দিলেন বেশ কয়েকটা বছর। ৪ নভেম্বর তাঁদের বিয়ের ৬ বছর সম্পুর্ণ হল। নিজেদের ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে কেনা কেকের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন কন্ডো। সেই কেকে লেখা রয়েছে,“আমি মিকুকে খুব পছন্দ করি। শুভ ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকী।”
এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কন্ডো জানান, তিনি স্কুলে থাকতে মেয়েদের পছন্দ করতেন। নিজের ভালোবাসার কথা তিনি জানিয়ে ছিলেন তাঁদের। ১ বার-২বার নয়, ৭ বার। কিন্তু প্রতিবারই জোটে প্রত্যাখ্যান। উপরন্তু তিনি একজন আদ্যোপান্ত অ্যানিমে ফ্যান হওয়ার জন্য তাঁকে প্রচুর কটূক্তি এবং উপহাসের সম্মুখীন হতে হত। এরপর ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয় মিকু নামের এই চরত্রটি। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর প্রেমে পড়ে যান কন্ডো। জানা গিয়েছে, কর্মক্ষেত্রেও তাঁকে প্রচুর কটূক্তি এবং খারাপ আচরণ হজম করতে হত। যার ফলে তাঁর আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় এবং বহুদিনের ছুটি নিয়ে সেখান থেকেও উধাও হয়ে গিয়েছিলেন কন্ডো।
উল্লেখ্য, এই কাল্পনিক চরিত্রটির নামের অর্থ হল, ‘ভবিষ্যতের প্রথম শব্দ’। এই চরিত্রটি একজন ১৬ বছরের পপ গায়িকা হিসেবেই অনুরাগীদের মধ্যে বিখ্যাত।
ভার্চুয়াল প্রেমিকার গল্প দেখেছি আমরা সিনেমায়, গল্পের বইতে। এখন বাস্তব জীবনেও ভার্চুয়াল প্রেমের হাতছানি। এই হাতছানিতে কি সাড়া দিয়েছে কেবল আকিহিকো কন্ডো, নাকি এই ভার্চুয়াল প্রেমিক প্রেমিকারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আমাদের আশেপাশেও? প্রশ্নটা খুব অমূলক কি?