কোচবিহার: রাজ আমলের প্রথা মেনে বড় দেবী তথা দুর্গাপুজোর সূচনা হল কোচবিহারে। দেবত্র ট্রাস্টবোর্ডের অধীনে থাকা শহরের গুঞ্জবাড়ি এলাকায় ডাঙ্গরাই মন্দিরে বৃহস্পতিবার এই পুজো হয়। বড় দেবীর শক্তি তথা মেরুদণ্ড হিসাবে ময়না কাঠের পূজা করা হয় সেখানে।
রাজ আমলের পরম্পরা অনুযায়ী, কয়েকশো বছর ধরে চলে আসা প্রায় সাড়ে ১১ ফুট লম্বা ময়না কাঠের শক্ত গুঁড়িকে দেবীরূপে কল্পনা করে এই পুজো হয়। পুজো শুরুর আগে দুধ, দই, ঘি, মধু, ডাবের জল সহ বিভিন্ন উপকরণ সহযোগে ময়না কাঠটিকে মহাস্নান করানো হয়। সেটিকে সাদা কাপড় দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। পরে সেটির মাথায় দুর্গার মুখোশ তথা বন্ডুস পড়িয়ে দেওয়া হয়। রাজ প্রথা মেনে প্রতিবারের মতো এবারও জোড়া পায়রা বলি দিয়ে এই পুজো হয়। দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন পুজো শেষে রাজ প্রথা মেনে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ময়না কাঠকে বাদ্যযন্ত্র ও বিশেষ পালকি সহযোগে বৈরাগী দিঘির ধারে মূল মদনমোহন মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। রাজ পরিবারের ধর্মীয় প্রতিনিধি অজয়কুমার দেববক্সী ময়না কাঠকে মদনমোহন মন্দিরে নিয়ে যাবেন।
এদিন এই পুজো করেন রাজপুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আগামী এক মাসের বেশি সময় ধরে ময়না কাঠটিকে মদনমোহন মন্দির এর বিশেষ ঘরে রাখা হবে। সেখানে প্রতিদিন দু’বেলা করে তার পুজো হবে। এটাকে যুগ পুজো বলে। পুজোয় একদিন অন্তর দুটি করে পায়রা বলি দেওয়া হবে। আগামী কৃষ্ণ অষ্টমীতে দেবীবাড়িতে বড় দেবীর মন্দিরে গৃহ পুজো হবে। এরপর আগামী রাধা অষ্টমীতে ময়না কাঠকে মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি থেকে দেবী বাড়ির মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে ময়না কাঠের মহাস্নান ও বিশেষ পুজো হওয়ার পর ময়না কাঠকে ট্রলির উপর স্থাপন করা হবে। সেখানে তিন দিন হাওয়া খাওয়ানোর পর ওই ময়না কাঠের উপর খড়ি মাটি দিয়ে বড় দেবীর মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হবে।