উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের আগে কল্পতরু মমতা। ৭ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার আলিপুরদুয়ারে গিয়ে বেশ কিছু প্রকল্পের ঘোষণা ও বহু প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। পাহাড় ডুয়ার্সের বন্ধ প্রতিটি চাবাগানের শ্রমিকদের জন্য মাসিক ১৫০০ টাকা করে ভাতা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি কয়েক হাজার চা শ্রমিককে জমির পাট্টা প্রদান ও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জল ও বিদ্যুৎ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মমতা।
ডুয়ার্সে এখনও বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েকটি চাবাগান। লোকসভা নির্বাচনের আগেই বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য বেশ কিছু প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি রাজ্যে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য ফের ভাতা ঘোষণা করেন তিনি। আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক সভা থেকে তিনি ঘোষণা করেন, বন্ধ চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য ১৫০০ টাকা করে ভাতা দেবে রাজ্য সরকার। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ডেকে নেন আলিপুরদুয়ার জেলাশাসককে। তিনি বলেন, “বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের মাসে ১৫০০ টাকা করে ভাতা দেবে সরকার। এটা তাড়াতাড়ি করতে হবে। এমাস থেকেই ভাত দেওয়া চালু করতে হবে শ্রমিকদের। সঙ্গে দেওয়া হবে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও পানীয় জল।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ শুনে ঘাড় নাড়েন জেলাশাসক।
এদিন মমতা আরও বলেন, শ্রমিকদের জন্য ভাতা প্রদানই নয়, সমস্ত চা শ্রমিককে পাট্টা দেবে তাঁর সরকার। শ্রমিকদের বাড়ি করার জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর জানান, এখানে অনেকেরই ভুয়ো জনজাতি শংসাপত্র রয়েছে। সেই শংসাপত্র বাতিল করা হবে।
এদিনের সভা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, চা শ্রমিকদের বিনামূল্যে র্যাশন কেন্দ্র দিচ্ছে না কেন্দ্র। অথচ সেই র্যাশন বিনামূল্যে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেখা করার সময় চেয়েছি। হয় বাংলার টাকা দাও। নইলে গদি ছাড়ো। এদিন ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৭৭টি প্রকল্পের শিলান্যাস, ৬ হাজার চাশ্রমিককে পাট্টা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত লোকসভা নির্বাচনে পাহাড় তরাই ডুয়ার্সের সবকয়টি আসনেই জয়লাভ করেছিল বিজেপি। এই এলাকাগুলোর একটা বড় অংশের ভোটার চা শ্রমিক। এবার সেই ভোট ব্যাংকে থাবা বসাতে মরিয়া বাংলার শাসকদল। এই লক্ষ্যেই লোকসভা ভোটের আগে চা শ্রমিকদের কাছে মমতা কল্পতরুর ভূমিকা পালন করছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।