উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিলকিস বানো মামলায় (Bilkis Bano case) সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) বড় ধাক্কা গুজরাট (Gujrat) সরকারের। বিলকিস বানোকে ধর্ষণের ঘটনা সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির নির্দেশ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম নির্দেশে অভিযুক্ত ১১ জনকে ফিরতে হবে জেলে। গতবছর এই অভিযুক্তদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার।
২০০২ সালে গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাটে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন, ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর ৩ বছরের মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করে অপরাধীরা। মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে অপরাধীদের কঠোর সাজা দেওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছিল। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন ১ জনের মৃত্যু হয়। গত বছরের ১৫ অগস্ট ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাট সরকার। আর এরপরই গণধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে।
গুজরাট সরকারের এই নির্দেশের পরই, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে বিলকিস বানোর পরিবার। অভিযুক্তদের মুক্তির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে যান তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএমের প্রবীণ নেত্রী সুভাষিণী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাল এবং অধ্যাপক রূপরেখা বর্মা। প্রায় বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে চলা মামলায় সোমবার রায় দিল শীর্ষ আদালত। এদিন শীর্ষ আদালত গণধর্ষণে ১১ সাজাপ্রাপ্তের আগাম মুক্তির নির্দেশ খারিজ করে দেয়।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাট সরকার, তা এক্তিয়ার বহির্ভূত। বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, অসাংবিধানিক ভাবে ১১ জন ধর্ষককে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই নেই গুজরাট সরকারের। যে হেতু মামলার শুনানি মহারাষ্ট্রে হয়েছে, তাই মহারাষ্ট্র সরকারই পারে এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। এদিন বিলকিস এবং অন্য আবেদনকারীদের তরফে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহ এবং বৃন্দা গ্রোভার প্রমূখ।