শিলিগুড়ি: তৃণমূলকে ভালোবাসার বার্তা পাঠিয়ে তিনি যে সমঝোতার পথে যেতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাহুল গান্ধি। রাগার বার্তা পেয়ে অবশ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে রাহুলের কোনও কথা হয়নি বলে ‘হাটে হাড়ি ভেঙেছেন’ তৃণমূল নেত্রী। আর বুধবার তৃণমূল নেত্রীর অবস্থান স্পষ্ট হতেই নতুন উদ্যমে মাঠে নেমে পড়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। এখনই যে কংগ্রেসের হাত ছাড়তে নারাজ সিপিএম, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বুধবার। এদিনই রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় অংশ নিয়ে রাহুল গান্ধির ‘হাত ধরার’ সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
দলের প্রতিনিধি হয়ে ২৫ জানুয়ারি কোচবিহারে পৌঁছে ন্যায় যাত্রায় অংশ নেবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলির সদস্য জীবেশ সরকার। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সম্পাদকের নির্দেশে আমি কোচবিহার যাচ্ছি। শিলিগুড়ি পর্যন্ত আমি থাকব। উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলাতেই আমাদের কর্মীরা ন্যায় যাত্রায় অংশ নেবে।’
রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন অসমের একটি মন্দিরে কেন রাহুল গান্ধি গিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত যা খুশি করেছিল সিপিএম নেতৃত্বকে। তাঁদের ধারণা ছিল, তৃণমূল নেত্রীর এহেন মন্তব্যের পালটা জবাব দেবে কংগ্রেস হাইকমান্ড। কিন্তু খোদ রাহুলই এই তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা খুঁজে পাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনটা হয়। আমাদের কেউ কিছু বলে দেন। ওঁদের কেউ কিছু বলে দেন। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো, সে কথাও উল্লেখ করেন রাহুল। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস চলতে চায়, এমন বার্তা রাহুল দিয়েছেন বলে অনেকেই মনে করেন। আর রাহুলের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সিপিএম কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকে নজর ছিল অনেকেরই। কেননা, তৃণমূলকে কাছে টানলে, তাঁদের সঙ্গে যে কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়বে, ইতিমধ্যে সেই বার্তা দিয়ে রেখেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তবে তাঁর সঙ্গে রাহুলের কোনও কথা হয়নি বলে বুধবার স্পষ্ট করে দেন মমতা। আর এরপরেই ন্যায় যাত্রায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। দূরত্বের পরিবর্তে কংগ্রেসের আরও কাছে যেতে ন্যায় যাত্রায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে ন্যায় যাত্রায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে এদিন রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় জীবেশ সরকারকে।