কুমারগঞ্জঃ রাত পোহালেই সরস্বতীপুজো। পুজোর দু’দিন পরেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। জীবনের বড় দ্বিতীয় পরীক্ষার আগে স্থানীয় ঠাকুরবাড়িতে প্রণাম করতে গিয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দীপঙ্কর বর্মন (২০)। প্রণাম শেষে সাইকেল চেপে বাড়ি ফেরার পথে পুজোর বাজার করে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কলম কিনেছিল সে। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না দীপঙ্করের। দেওয়া হল না পরীক্ষাও। পথে কুমারগঞ্জ ব্লকের বরাহার আইটি কলেজ মোড়ে একটি চার চাকার গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম হয় দীপঙ্কর। সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় নিয়ে যায় কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল। পরবর্তীতে ওই ছাত্রের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রেফার করা হয় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় ছাত্রের। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে কুমারগঞ্জে। এদিকে ঘাতক গাড়িটিকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দীপঙ্কর বর্মন গোপালগঞ্জ আরএন উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। এবারে তার পরীক্ষার সিট পড়েছিল কুমারগঞ্জ হাই স্কুলে। বাড়ি কুমারগঞ্জ থানার মোহনা গ্রাম পঞ্চায়েতের খামার বোদরা এলাকায়। মৃতের বাবা সুভাষ বর্মন বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে ছেলের দুর্ঘটনার খবর পাই। ছেলেকে বাঁচানোর সব চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পারি নি।’ মৃতের দাদু অতুল বর্মন জানান, ‘বুধবার সরস্বতী পুজো। স্কুল ও বাড়ির পুজোর জন্য তার উপোস থাকার কথা ছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য সে ঠাকুরবাড়িতে প্রণাম করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে সাইকেল করে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ উলটো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি ধাক্কায় সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয় দীপঙ্কর। ছেলেটা এবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।’
কুমারগঞ্জ থানার আইসি রামপ্রসাদ চাকলাদারের দাবি, ‘ঘাতক গাড়িটির সামনের চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই পরীক্ষার্থীকে ধাক্কা মারে।’ গোপালগঞ্জ আরএন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রমোহন পাল শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আগে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আমাদের এক ছাত্রের প্রাণ কেড়ে নিল।’