আলিপুরদুয়ার: থানা মানে খাকি পোশাক পরা রাগী পুলিশকর্মী ও একগুচ্ছ অভাব অভিযোগ। এটাই সকলের মনে ‘থানা– পুলিশ’ নিয়ে ধারণা। আইন, চোর, ডাকাতের ধরপাকড়ের গল্পও আছে। থানার পরিবেশে রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ এগুলি খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এসবের মাঝেও আলিপুরদুয়ার থানায় স্বস্তি দিচ্ছে সুন্দর ফুল বাগান।
শীতের রংবেরংয়ের ফুলে শোভা বাড়িয়ে তুলছে বাগান। ফুলের সৌন্দর্য কিছুটা হলেও মানসিক স্বস্তি দেয় অনেককে। আলিপুরদুয়ার থানায় গেলেই তিনটি ফুলের বাগান নজরে পড়বে। তিনটি বাগান বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। থানার গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই ডানদিকে একটি বাগান। সেখান থেকে অল্প এগোতেই আরও দুটি বাগান রয়েছে। তবে থানার অফিসের গা ঘেঁষে বাগানের ফুল গাছের সংখ্যা বেশি। গাদা, ক্যালেন্ডুলা, গ্ল্যাডিওলাস, গোলাপ, ডানথাস সহ শীতের বিভিন্ন ধরনের নজরকারা ফুল দেখা যায়। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘থানায় ফুল বাগান অন্যমাত্রা পায়।’
প্রাক্তন আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘থানায় অভাব অভিযোগ জানাতেই সাধারণ মানুষ আসেন। সেক্ষেত্রে ফুল মানুষকে কিছুটা হলেও শান্তি দেয়। বিভিন্ন ধরনের ফুলের মধ্যে বিশেষ প্রজাতির গোলাপ রয়েছে। এখনও বেশ কিছু ফুল ফোটা বাকি রয়েছে। ছোটবেলা থেকেই বাগানের প্রতি আমার শখ রয়েছে। তাই এই শখ পূরণ করছি এখানে, যাঁরা আসেন তাঁদেরও ভালো লাগে।’
পুলিশকর্মীরা সারাদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। বাইরেও যাতায়াত করতে হয়। তাই বাগান পরিচর্যা করার সময় পাওয়া যায় না। তাই স্থায়ী মালি রাখা হয়েছে। অবসর সময়ে পুলিশকর্মীরাও গাছে জল দিয়ে থাকেন। শীতের রোদে অবসরে পুলিশকর্মীরা বাগানে গিয়ে বসে সময় কাটান।
জেলা পুলিশের উদ্যোগে থানায় থানায় সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হলেও আলিপুরদুয়ার থানায় অবশ্য প্রাক্তন আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্যের সময়ে বাগানের প্রতি বাড়তি নজরদারি চলত। কোনও গাছে বা ফুলে পোকা ধরল কি না, গাছে জল ও সার ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কি না, আগাছা দূর করা। সবকিছুতে নজর রাখতেন তিনি। ফলে বাগানের প্রতি বাড়তি নজরদারি চলত।
সকলেই বাগানের ফুল গাছ একবার করে চোখ বুলিয়ে নিতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন রংয়ের গোলাপ যেন সকলকে আকর্ষিত করে তুলত। পুলিশকর্মীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, বিশেষ প্রজাতির গোলাপের কয়েকবার ফুল ফোটার পর সমস্যা তৈরি হয়। তারপর বাগান বিশেষজ্ঞদের ডেকে আনা হয়। পরামর্শ মেনে সেই গোলাপের পরিচর্যা চলে। মাটি, সার জোগাড় করা, বাগান তৈরি, জল দেওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হত। দুর্গাপুজোর পর থেকে বাগান তৈরির কাজ শুরু করেন মালি।