তুফানগঞ্জ: ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। যখন চারদিকে জোরকদমে প্রচার চলছে। তখন তুফানগঞ্জে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। পার্টি অফিস দখল ঘিরে বিজেপির দু’পক্ষের মধ্যে বচসা। যাকে কেন্দ্র করে শহরের রাজনীতিতে উত্তাপ তুঙ্গে। মালতি রাভা ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোকজনকে পার্টি অফিস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এ নিয়ে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত পার্টি অফিসের বাইরে চলে গণ্ডগোল।
দীর্ঘদিন থেকেই ৯ নম্বর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক মালতি রাভার ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীর সঙ্গে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর কোন্দল চলছে। আগেও একাধিকবার গণ্ডগোল হতে দেখা গিয়েছে। কোচবিহার কিষান মোর্চার সহ সভাপতি প্রসেনজিৎ বসাক সহ বেশ কিছু পুরোনো কর্মী এই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছেন। বিজেপির দলীয় সূত্রে খবর, ভারতীয় জনতা কিষান মোর্চার তরফে বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা ও নিশীথ প্রামাণিকের ব্যানার লাগাতে বাধা দেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীর নেতারা। তা নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। এদিন রাতে প্রসেনজিৎ বসাক সহ বেশ কয়েক জনকে পার্টি অফিসের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীর লোকজন বৈঠক করে।
বৈঠক শেষ করার পর তুফানগঞ্জ শহর বিজেপি যুব মোর্চা সভাপতি শুভাশিস ধর স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শহর মণ্ডল সভাপতির অনুমতি ছাড়া কার্যালয়ের চাবি দেওয়া সম্ভব নয়। একই সঙ্গে অপেক্ষারত কিষান মোর্চা নেতাকর্মীদের প্রবেশে একপ্রকার বাধা দেওয়া হয়। এরপরই দলীয় কার্যালয়ে দু’পক্ষের মধ্যে প্রায় দেড়ঘণ্টার মত হই হট্টগোল চলে। শেষ পর্যন্ত ওই বিধানসভার কনভেনার বিমল পালের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে সমস্যা মেটে।
এবিষয়ে ৫ নম্বর শহর মণ্ডল কিষান মোর্চা সভাপতি রাজা সেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মালতি রাভার অঙ্গুলিহেলনেই সমস্যা চলছে। তার কথায়, দলীয় কর্মসূচি করতে গেলেই বিধায়ক ঘনিষ্ঠ নেতারা নানা অজুহাত দেখিয়ে বাধা দেন। রবিবারেও দলীয় কার্যালয়ের চাবি আটকে রাখা হয়। তার থেকেই এই ক্ষোভ। প্রসেনজিৎ বসাকও একই সুরে বলেন, ভোটের মুখে পার্টি অফিস বন্ধ রেখে নির্বাচনের কাজ ব্যাহত করে তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ গতকালকের ঘটনা। যদিও পুরো ঘটনার কথা অস্বীকার করে শুভাশিস ধর বলেন, ‘বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। যারা নিজেদের দলীয় পতাকা অবমাননা করে ও পার্টি অফিস ভাঙচুর করে তারা বিজেপি নেতা কিনা সন্দেহ হয়।’
এদিকে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলের শহর ব্লক সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ধর প্রতিক্রিয়া জানাতে এক মুহূর্ত দেরি করেননি। তিনি বলেন, ‘জন বারলা নিজেই বলছেন প্রার্থী মনোজ টিগ্গাকে মানেন না। তারই আঁচ পড়েছে তুফানগঞ্জ শহরে। আসলে নির্বাচনের আগে টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তাদের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব।’