মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: চিঠি লিখে ১৪ বছরের মেয়েটি তার ‘বয়ফ্রেন্ড’কে জানায়, বাড়িতে সবার ‘অত্যাচারে’ সে টিকতে পারছে না। হিরোর মতো তার বয়ফ্রেন্ডও বন্ধুদের নিয়ে নাবালিকাকে ‘উদ্ধার’ করে কোচবিহারে পাড়ি দেয়। সেই প্রেমিকও সাবালক নয়, ১৭ বছর বয়সি। শনিবার সকালে কোচবিহার (Coochbehar) ও নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ চারজনকে আটক করে। রবিবার তাদের জলপাইগুড়ি আদালতে (Jalpaiguri Court) পাঠানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আটক চারজনের মধ্যে একজন সাবালক। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বাকি তিনজনের ঠাঁই হয়েছে সরকারি হোমে।
নিউ জলপাইগুড়ি থানার (NJP) ১৪ বছরের ওই নাবালিকার সঙ্গে কোচবিহারের ১৭ বছরের নাবালকের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। নাবালক কয়েকবছর থেকে শিলিগুড়িতে (Siliguri) কাজ করছে। দুজনের পরিচয় কোথা থেকে, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছে না পুলিশ।
এদিকে, মেয়ে বড় হচ্ছে দেখে বাড়ির লোকেরা তার ওপর নজর রাখতে শুরু করে। সবসময় মোবাইল হাতের সামনে পাওয়া যায় না। তাহলে উপায়? চিঠি আদানপ্রদান করে চলতে থাকে প্রেম (Love)। দিন কয়েক আগে নাবালিকা চিঠি লিখে নাবালককে জানায়, সে নাকি বাড়ির লোকের অত্যাচারে টিকতে পারছে না। সবসময় কেউ না কেউ তার ওপর নজরদারি চালাচ্ছে। নিজের প্রেমিকার এই পরিস্থিতির কথা জেনে নাবালক কোচবিহারে যায় ‘সংসার’ করার প্রস্তুতি নিতে। কয়েকদিন দেখা-সাক্ষাৎ, চিঠি দিেয় কথা না বলতে পারায় অস্থির হয়ে ওঠে নাবালিকা।
গত বৃহস্পতিবার সে নাবালককে চিঠি লিখে কোচবিহার যাওয়ার কথা জানায়। এরপর যোগাযোগ করা হয় নাবালকের দুই বন্ধুর সঙ্গে। তারাও কোচবিহারের বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে নাবালক তার দুই বন্ধুকে নিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায় আসে। নাবালিকাও বাইরে বেরোনোর নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। সারাদিন এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরির পর সেই রাতেই তারা কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দেয়। এদিকে, দিনভর মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় নাবালিকার পরিবার।
তদন্তে নেমে শনিবার সকালে কোচবিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ। ততক্ষণে কোচবিহারে পৌঁছে গিয়েছে নাবালক-নাবালিকার দল। এদিক থেকে পুলিশও পৌঁছায়। এরপর ঠিকানা খুঁজে ডেরায় হানা দেয়। একসঙ্গে আটক করা হয় চারজনকে। নিউ জলপাইগুড়ি থানায় ফিরিয়ে আনতে শনিবার গভীর রাত হয়ে যায়। রাতে পুলিশ হেপাজতে রাখার পর রবিবার সকালে চারজনকে আদালতে তোলা হয়। পুলিশের অনুমান, কোনও এক বন্ধুর মাধ্যমে চিঠি চালাচালি হত।