রায়গঞ্জ: বড়সড়ো দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেন রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের আবদুলঘাটা ক্যাম্পাসের পড়ুয়ারা। বুধবার দুপুরে অ্যাকাডেমিক ব্লকের হলের ভিতর হঠাৎ ফলস সিলিং ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় মেডিকেল চত্বরে। এতে কেউ জখম না হলেও আতঙ্ক ছড়ায় পড়ুয়াদের মধ্যে।
২০২২ সালের মার্চ মাসে রায়গঞ্জের আবদুলঘাটায় তৈরি হওয়া মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক ব্লকে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। এর আগেও একবার অ্যাকাডেমিক ব্লকের ফলস সিলিং ভেঙে পড়েছিল। এদিন আবার একই ঘটনা ঘটল।
এই ব্লকের লাগোয়া এলাকাতেই রয়েছে হস্টেল। এদিন পড়ুয়ারা বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অ্যাকাডেমিক ব্লকের ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে। তবে সেই সময় ক্লাস চলছিল না। ক্লাস চলাকালীন এই ঘটনা ঘটলে বড় বিপদ হতে পারত। প্রশ্ন উঠেছে, ভবনের বাকি ফলস সিলিংগুলিই বা কতটা নিরাপদ? এনিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন পড়ুয়া থেকে শিক্ষক, সকলেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ অ্যাকাডেমিক ব্লকের গ্রাউন্ড ফ্লোরে ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে। এদিন ক্লাস না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেনি। তা না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটত। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কৌশিক সমাজদার জানান, ‘এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। উপর দিয়ে জলের পাইপ যাওয়ায় ড্যাম্প হয়ে এমন ঘটনা ঘটছে। সেসব মেরামত করে ফেলা হবে। তবে আজ কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিকাঠামো ও পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। দুটি ক্যাম্পাসের বিল্ডিংয়েই মাঝেমধ্যে বিপত্তি দেখা যাচ্ছে। রোগী পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বারবার। কখনও অকারণে রেফার, কখনও আবার রোগীর পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। রোগীর স্ট্রেচার ঠেলা থেকে অক্সিজেনের নল লাগানো, একাধিক পরিষেবা দেওয়ার জন্য পরিজনদের কাছে টাকা চাওয়ার অভিযোগও শোনা যায়।
এই ঘটনায় এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক কুশান ভৌমিক বলেন, ‘দু’বছর আগে তৈরি হওয়া মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসটির মান খুবই খারাপ। চালু হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে প্রথমবার ফলস সিলিং ভেঙে পড়েছিল। আমরা এমন ঘটনা আশা করিনি। প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। আমরা গোটা বিল্ডিংয়ের যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।’
এবিভিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভব্রত অধিকারী জানান, তৃণমূলের নেতাদের ২০ শতাংশ কাটমানি দিতে হচ্ছে ঠিকাদারদের। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ সমস্ত ক্ষেত্রে নিম্নমানের কাজ করছেন ঠিকাদাররা। আগামীতে এই আমলের তৈরি কোনও বিল্ডিংয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন নিয়ে খেলছে।