উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে। হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে রাজ্যকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই ভোট করতে হবে। খারিজ হয়ে গেল রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আর্জি। আর তাতেই নিজেদের জয় দেখছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তৎপরতা তুঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি নিতে চলেছে কমিশন।
মঙ্গলবারই রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারাতেই। এদিন সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য ও কমিশন। কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তারা শীর্ষ আদালতে এসেছে তা জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। সুপ্রিম কোর্টে মামলা খারিজ হতেই পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে তৎপর হল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বুধবারের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখতে চলেছে কমিশন বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, আপাতত প্রতি জেলার জন্য ১ কোম্পানি করে বাহিনী চাওয়া হবে। ভোটের আগে পরিস্থিতির ওপর বিচার করে বাড়ানো হতে পারে বাহিনীর সংখ্যা।
সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ্যে আসতেই বৈঠকে বসেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতি জেলার জন্য আপাতত ১ কোম্পানি করে বাহিনী চাইবে কমিশন। এছাড়া উত্তেজনাপ্রবণ ও স্পর্শকাতর এলাকার জন্য অতিরিক্ত বাহিনী চাইবে তারা। বাহিনী চাওয়া হবে স্ট্রং রুমের নিরাপত্তার জন্যও।
তবে প্রতিটি জেলার জন্য দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাস মোকাবিলা ও ৭০ হাজার বুথে ভোট করানো কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। কমিশন সূত্রে খবর, আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে রুটমার্চ করিয়ে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পোক্ত করতে চায় তারা।
এদিকে, আদালতের এমন রায়ে চিন্তিত নয় শাসকদল তৃণমূল। তেমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলগত অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। রাজ্য পুলিশ থাকুক, ভিন্রাজ্যের পুলিশ থাকুক, আর কেন্দ্রীয় বাহিনীই থাকুক। কোনও অবস্থাতেই আমরা ভাবিত নই। কারণ রাজ্যের মানুষ বার বার প্রমাণ করে দিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁরা আছেন। আমাদের ভাবনার কোনও কারণ নেই। জয় আমাদের নিশ্চিত।’