উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘পরীক্ষার আগেই উত্তরসহ প্রশ্নপত্র পেয়েছিলাম। পরীক্ষার দিন দেখি, হুবহু একই প্রশ্নপত্র।’ এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন খোদ সর্বভারতীয় মেডিকেল পরীক্ষার (NEET) এক পরীক্ষার্থী। এই মন্তব্যের পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাসের ঘটনায় মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বিহার পুলিশ। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা সরকার অস্বীকার করলেও প্রকাশ্যে ছাত্রের দাবিতে অস্বস্তি বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের।
জানা গিয়েছে, ধৃত ছাত্রের নাম আয়ুশ রাজ। আয়ুশের দাবি, ‘পটনার লার্ন হোস্টেলে গত ৪ মে রাতে আমায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমায় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। একইসঙ্গে দেওয়া হয় উত্তরপত্র। তা পুরো মুখস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেদিন আমার সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরও ২০-২৫ জন পরীক্ষার্থী। এর পর পরীক্ষা হলে প্রবেশ করে আমি দেখি আমাকে দেওয়া প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবহু এক।’ এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে ছাত্রের বিস্ফোরক দাবি প্রকাশ্যে আসতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পটনা পুলিশ।
এদিকে সর্বভারতীয় মেডিকেল পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা সরকার অস্বীকার করলেও ছাত্রের বিস্ফোরক দাবিতে চরম বিপাকে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্পষ্ট ভাবে জানান, ‘নিট পরীক্ষার কোনওরকম দুর্নীতি, প্রশ্নফাঁস বা বেনিয়মের ঘটনা ঘটেছে এইরকম পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এবং আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষক সংস্থা এনটিএ’র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’
তবে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী যাই বলুন না কেন, আয়ুশ রাজই বিতর্ককে ফের উসকে দিয়েছেন। পটনা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গত ৫ মে রাত ২ ট নাগাদ গোপন সূত্রে খবর আসে পরীক্ষা সঞ্চালন বিভাগ ও কিছু পরীক্ষার্থীদের উদ্যোগে নিট পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরেই একটি সন্দেহজনক গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। এরপরই অভিযান চালিয়ে গাড়িটিকে আটক করা হয়। গাড়ির চালক সহ মোট ৫ জনকে আটক করা হয়। গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ৪ জন পরিক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ডের জেরক্স কপি। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করে, পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে রফা করে প্রশ্নফাঁস করছিল তাঁরা। আরও একাধিক সেন্টারে এই একই ঘটনা ঘটেছে। মামলার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ বছর নিট পরীক্ষায় বেনজিরভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৬৭ জন। পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পাশাপাশি বহু জনকে গ্রেস মার্কস দেওয়ারও অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীরা। এরপরই ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর বাড়তি গ্রেস মার্কস বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।