জলপাইগুড়ি: এবার জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) থেকে হিমসাগর আমের চারাগাছ যাবে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলিতে। শুধু তাই নয়। উত্তরের পাহাড় থেকে সমতলের জেলাগুলিতে দার্জিলিংয়ের কমলালেবু, মুসম্বি প্রজাতির ম্যান্ডারিন, মালটা এবং লিচু, পেয়ারা, পাতিলেবু, কাগজি লেবু, ড্রাগন ফলের চারাগাছ জলপাইগুড়ি জেলা হর্টিকালচার দপ্তরের মোহিতনগরের দ্বিতীয় খামার বাড়ি থেকে পাঠানো হবে। পিপিপি মডেলের এই ফার্ম উত্তরবঙ্গে একমাত্র খামারবাড়ি। হর্টিকালচার দপ্তরের জেলার সহকারী অধিকর্তা খুরশিদ আলম বলেন, ‘খোদ মালদা থেকে হিমসাগর গাছের ডাল আনা হয়েছে। দার্জিলিং থেকে কমলালেবুর ডাল। মোহিতনগরের খামারে সেই গাছের ডালের সঙ্গে আম্রপালি আম গাছ ও মালটার ডালের মধ্যে গ্রাফটিং অর্থাৎ কলম করানো হয়েছে। এরপর সেখান থেকে যে চারাগাছ তৈরি হবে তা থেকে দার্জিলিংয়ের কমলালেবু ও মালদার হিমসাগর আমের গাছ হবে।’ মালদা থেকে আনা হিমসাগরের ডাল দিয়ে ২৫ হাজার চারাগাছ তৈরি হয়েছে। এছাড়া গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে ১৫ হাজার দার্জিলিং কমলালেবুর চারাগাছ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, হর্টিকালচার দপ্তরের মোহিতনগরের এক নম্বর ফার্ম থেকে আনা লিচু, পাতিলেবু, মালটা, সবেদা, ড্রাগন ফলের চারাগাছ এই দ্বিতীয় ফার্মে তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রায় দুই লক্ষ লেবু ও আম্রপালি, ৫ হাজার ড্রাগন ফল, মালটা ও ম্যান্ডারিনের লক্ষাধিক চারাগাছ তৈরি হয়েছে। মোহিতনগরের প্রথম খামারবাড়িতে আম্রপালি, সবেদা, লিচু, পেয়ারা, ড্রাগন ফলের মাদার গাছ রয়েছে। সেই গাছ থেকেও ডাল কেটে কলমচারা আনা হয়েছে। তিন বছর আগে এই দ্বিতীয় ফার্মের জায়গাটি জঙ্গলে ঢাকা ছিল। কিন্তু পিপিপি মডেলে ফার্ম চালু করাতে এখন দপ্তর লাভের মুখ দেখছে। এই পিপিপি মডেলের ফার্মে কৃষক ও উৎসাহী মানুষ বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে আসছেন। তাঁরা সরকারি ন্যায্যমূল্যে ফলের চারাও কিনছেন। সেইসঙ্গে তাঁরা এক নম্বর ফার্মের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ট্রেনিং নিচ্ছেন।
হর্টিকালচার দপ্তরের (Horticulture department) জলপাইগুড়ি জেলার সহকারী অধিকর্তা খুরশিদ আলম জানান, আসলে আগে বীজ এনে চারাগাছ তৈরি করে সাফল্য পাওয়া যেত না। এবার কলম করে ফলের চারাগাছ তৈরি করায় দারুণ সাফল্য এসেছে। বর্ষার সময় এই চারাগুলি উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলায় পাঠানো হবে। হিমসাগর আম, দার্জিলিংয়ের কমলালেবু, মালটা, পেয়ারা, লিচু, ড্রাগন ফলের মোট ১২ লক্ষ চারা তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা থেকে হর্টিকালচার দপ্তরের আধিকারিকরা মোহিতনগরের এই ফার্মে আসবেন চারাগাছ পরিদর্শনে। যে ধরনের কলম করে ফলের চারাগাছ তৈরি হয়েছে, সেগুলি পাহাড় ও সমতলের আবহাওয়ায় বেশ ভালোভাবে ফল দেবে। জেলায় জেলায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে হর্টিকালচার দপ্তর, বিডিও ও পঞ্চায়েত অফিসে চারাগাছগুলি বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।