ইসলামপুর: ভালো খবরের পাশাপাশি খারাপ খবরেরও বিরাম নেই। একদিকে কোচবিহারের এক হোমে থাকা অনাথ বালিকার নতুন বাবা-মা’র সঙ্গে ইতালি রওনা হওয়ার খবর যখন মন ভালো করে দিচ্ছে তখন ইসলামপুরে ২২ দিনের এক কন্যাসন্তানকে মাত্র ১৫ হাজার টাকায় বিক্রির চেষ্টার খবরে মন মুষড়ে পড়তে বাধ্য। অভিযুক্ত শিশুটির বাবা-মা। ঘটনায় দালালচক্রের হাতেরও অভিযোগ। শিশুটিকে হাতবদলের জন্য শুক্রবার বিকেলে ইসলামপুর শহরের কোর্ট ময়দান এলাকায় আনা হয়েছিল। কিন্তু হাজার হলেও নিজেদের সন্তান তো! বিবেকের দংশনে বাবা–মা শেষপর্যন্ত বেঁকে বসেন। গোটা বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও শনিবার ঘটনার খবর ছড়াতেই পাল্লা দিয়ে চাঞ্চল্যও ছড়ায়। গোটা অভিযোগ শিশুটির বাবা-মা ও যারা ওই শিশুকে কিনতে চেয়েছিলেন, তাঁরা স্বীকার করলেও পুলিশ মানতে চায়নি।
শুক্রবার মুজাহিদ আলম সহ তাঁর পরিচিতরা অন্যান্য দিনের মতো কোর্ট মাঠ সংলগ্ন রামকৃষ্ণপল্লি মোড়ের একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ছোট্ট এক শিশুকে নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকজনের ভিড় দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে খোঁজখবর করতেই তাঁরা গোটা বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁদের কাছে খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই শিশুর বাবা-মা সহ শিশুটিকে যাঁরা কিনতে এসেছিলেন, তাঁদের সবাইকে থানায় নিয়ে যায়।
ওই শিশুর মা বললেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। আমার গলায় টিউমার রয়েছে। চিকিৎসার টাকা নেই। মেয়েকে কীভাবে বড় করে তুলব তা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আমাদের এলাকার একজন আমাদের শিশুকে বিক্রির পরামর্শ দেন। এজন্য ৭০০ টাকাও নেন। ১৫ হাজার টাকায় মেয়েকে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। চার হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়। ইসলামপুরে গিয়ে বাকি টাকা নিয়ে মেয়েকে গোয়ালপোখরের এক মহিলার হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। তবে পরে ভুল বুঝতে পেরে পিছিয়ে আসি।’ গোয়ালপোখরের পোখরিয়া এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলার বক্তব্য, ‘দীর্ঘদিন বিয়ে হলেও আমাদের সন্তান নেই। তাই এভাবে শিশু কিনতে চেয়েছিলাম।’ অন্যদিকে, ইসলামপুর থানার আইসি হীরক বিশ্বাস বলেন, ‘শিশু বিক্রি নিয়ে ভুল খবর রটানো হয়েছে। শিশুটি যাঁর, তাঁর কাছেই রয়েছে। আইনি পদক্ষেপের কোনও বিষয়ই নেই।’