রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: মিরিকবাসীর সুরক্ষায় এবার বিশেষ নজর দিচ্ছে পুরসভা (Mirik Municipality)। স্থানীয় বাজারে মরা মাছমাংস, অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই অসাধু কারবার বন্ধ করতে এবার কঠোর নির্দেশিকা দিল পুরসভার প্রশাসক বোর্ড। বৃহস্পতিবার এক নির্দেশিকায় মিরিক পুরসভার প্রশাসক লালবাহাদুর রাই জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকালে পুরসভার স্যানিটারি এবং ফুড ইনস্পেকটর প্রতিটি বাজারে গিয়ে মাছমাংসের গুণমান পরীক্ষা করবেন। এই জন্য বিশেষ টিমও তৈরি করা হয়েছে। কোথায় কত মজুত রয়েছে তা দেখবেন। তারপরই বাজার থেকে মাছ এবং মুরগির মাংস বিক্রি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। দিনের ব্যবসা শেষে পুরসভার কাছে মজুত এবং বিক্রির হিসাবও দিতে হবে। পুরসভার এই সিদ্ধান্তে খুশি মিরিকবাসী। তবে, কতদিন এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
মিরিকে পুরভোট বকেয়া রয়েছে। প্রায় দু’বছর ধরে মিরিকে প্রশাসক বোর্ড বসিয়ে কাজ চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই এই দায়িত্বে রয়েছেন। বুধবার শহরে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা শুরু করেছে পুরসভা। গোটা মিরিকে সমস্ত বেআইনি নির্মাণ, সরকারি জমি দখলমুক্ত করার কথা বলেছেন প্রশাসক। যেভাবে মিরিক শহরে অবৈধ নির্মাণ এবং রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষও ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। অবশেষে পুরসভা পদক্ষেপ করায় খুশির হাওয়া মিরিকে।
বৃহস্পতিবার ফের মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে মাছমাংস বিক্রিতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। পুরসভার প্রশাসক বলছেন, ‘মিরিক বাজারে পচা, অস্বাস্থ্যকর মাছমাংস বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই পাচ্ছিলাম। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব করছেন। এই মাছমাংস খেয়ে মানুষের শরীরে রোগভোগ বাসা বাঁধছে। তাই আমরা এবার মিরিকবাসীর স্বার্থে মাছমাংসের অবাধ বিক্রিতে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে বাজার খোলার আগেই আমাদের স্যানিটারি ও ফুড ইনস্পেকটররা সেখানে পৌঁছাবেন। ব্যবসায়ীরা যে মাছ, মুরগি বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন সেগুলি প্রত্যেকটি ভালোভাবে পরীক্ষা করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে। তবে, কত মাছ, মুরগি বাজারে এসেছে সেই হিসাবও পুরকর্মীরা নিয়ে আসবেন। বাজার বন্ধ হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের পুরসভার কাছে সেদিনের মজুত এবং বিক্রির হিসাব দিতে হবে। কোনও ব্যবসায়ী নির্দেশ অমান্য করলে এবং এর পরেও বাজারে কোথাও পচা মাছ, মুরগি বিক্রির অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রির অভিযোগ শুধু মিরিক নয়, গোটা পাহাড় এবং সমতলেও রয়েছে। মিরিকের এই সিদ্ধান্তকে বাকি পুরসভা এবং পঞ্চায়েত বোর্ডগুলি অনুসরণ করে কি না সেটাই এখন দেখার।