বালুরঘাট: দিনের বেশিরভাগ সময় মাঠেই পড়ে থাকতেন। ফুটবলেই যেন তার প্রাণ ভোমরা। জীবনের অর্ধেকটা সময় কেটে গিয়েছে ফুটবল নিয়েই। অবশেষে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর খেলার জগতে স্বীকৃতি পেলেন বালুরঘাটের দেবাশিষ ঘোষ। তিনি কলকাতার উয়াড়ি অ্যাথলেটিক ক্লাবের গোল কিপিং কোচ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। যদিও ম্যাচ গড়পেটার জন্য এই ফুটবল দলের বিরুদ্ধে সাসপেনশনের কথা চলছে। তবু কলকাতায় প্রশিক্ষণ চলছে বলে জানান দেবাশিষবাবু।
বালুরঘাট শহরের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা দেবাশিষ ঘোষ। ছোটবেলা থেকেই তিনি আদ্যোপান্ত মাঠ পাগল মানুষ। যা নিয়ে বহু জায়গায় থেকে তাকে বিস্তর কটুক্তিও শুনতে হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুই তাকে দমাতে পারেনি। গভীর অধ্যাবসায় ও অনুশীলন তাকে কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন এই ফুটবল দলের গোল রক্ষক কোচের শিরোপা এনে দিয়েছে। ফুটবল খেলার শুরু থেকেই তিনি পরিচিতি লাভ করেন। প্রথমে বালুরঘাটের অভিযাত্রী ক্লাবের হয়ে খেলতেন। পরে এক বছর কচিকলা ক্লাবে খেলার পর স্থায়ীভাবে নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলতেন। নিয়মিত ফুটবল খেলতেন তিনি। পরে ফুটবলের কোচিং শুরু করেন। নেতাজি ও বিটিসি-হটসার হয়ে কোচিং দিতেন। বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। বাংলার বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় তথা ইস্টবেঙ্গল ফুটবল দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক অভিজিৎ মণ্ডল তার হাতেই একসময় তৈরি হয়েছিলেন বলে জানা যায়। জীবনের অর্ধেকটা সময় ফুটবল অন্তপ্রাণ হয়েও তার কাঙ্খিত জায়গা তিনি পাননি। অবশেষে সিএফএল প্রিমিয়ার লিগ খেলা উয়াড়ি অ্যাথলেটিক ক্লাবের কোচ হিসেবে তাকে নিযুক্ত করায় সঠিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বলে মত বালুরঘাটের ক্রীড়াপ্রেমীদের। প্রান্তিক জেলার একটি ছোট শহর থেকে গিয়ে কলকাতার ফুটবল দলে প্রশিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ায় গর্বের কথা জানাচ্ছেন বালুরঘাট তথা জেলাবাসী। কিন্তু এই ফুটবল দলের বিরুদ্ধে সাসপেন্ড হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। যদিও একথা মানতে নারাজ দেবাশিষবাবু।
তিনি বলেন, ‘আমার এক ছাত্র কুমারগঞ্জের রঞ্জন সোরেন সিএফএল প্রিমিয়ার লিগে কালীঘাট মিলন সংঘ এফসির হয়ে খেলছে। উয়াড়িতে আমাদের প্রশিক্ষণ চলছে। ম্যাচ গরপেটার জন্য অভিযোগ হয়েছিল। সাসপেন্ডের জন্য আলোচনা ও বৈঠক চলছে। তবে যা শুনেছি সবকিছু মিটমাট হয়ে গিয়েছে। অফিসিয়ালি ডিক্লেয়ার হয়নি। সাসপেন্ডের কোনও রায় দেয়নি।’
তার পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, তিনি বুধবার রাতেই ওই ফুটবল দলের কোচ হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় রওনা দিয়েছিলেন। পরিবারের সকলেই সব সময় পাশে থেকে তার মনোবল বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেকেই ফোন মারফত ও দেখা করে শুভেচ্ছা বার্তা জানাচ্ছেন।