সানি সরকার, শিলিগুড়ি: শুধুমাত্র বাগডোগরা বিমানবন্দর কিংবা নিউ জলপাইগুড়ি জংশন নয়, এবার শিলিগুড়ির (Siliguri) তেনজিং নোরগে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস (Tenzing Norgay Bus Terminus) এলাকা থেকেও ‘শেয়ার ক্যাব’ (Share Cab) চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিকিমের (Sikkim) পরিবহণ দপ্তর। লাক্সারি গাড়ির পাশাপাশি শিলিগুড়িতে এবার ছুটবে শেয়ার ক্যাবের চাকা। এতে ছোট গাড়ির পাশাপাশি বাস মালিকরাও সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। বাস মালিকদের আশঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও পদক্ষেপ না করলে পথে বসতে হবে তাঁদের। ছোট গাড়ির মালিকদের সঙ্গে তাঁরাও এবার আন্দোলনে শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শেয়ার ক্যাবের জন্য সিকিম পথের পরিবর্তে উত্তরবঙ্গের রাস্তা কেন বেছে নেওয়া হচ্ছে, এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। সিকিমের পর্যটন দপ্তরের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, পর্যটকদের সুবিধার জন্যই নাকি এই ব্যবস্থা। গ্যাংটক থেকে নাথুলা, পেলিং, নামচি সহ একাধিক রুট রয়েছে। সেখানেও পর্যটকরা বেড়াতে যান। গাড়িভাড়া করার ক্ষেত্রে সেখানেও পর্যটকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। তাহলে সেখানে কেন শেয়ার ক্যাব চালু করা হচ্ছে না? প্রশ্ন উঠলেও তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘শিলিগুড়ি রুটে সাফল্য মিললে উত্তরবঙ্গের বাকি পর্যটনকেন্দ্রগুলির দিকে নজর দেওয়া হবে।’
ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার, তা বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হচ্ছে না সমতলের চালক এবং গাড়ি মালিকদের। তাই এখন থেকেই আন্দোলনের সলতে পাকানো শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে শিলিগুড়ি এবং সিকিমের মধ্যে সমতলের প্রায় তিন হাজার ছোট গাড়ি চলাচল করে। বেসরকারি বাস চলে ৪২টি। বাসের থেকে শেয়ার ক্যাবের ভাড়া (যাত্রী পিছু ৪০০ টাকা) বেশি হলেও স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে তাতেই পর্যটকরা উঠবেন বলে ধারণা বাস মালিকদের।
রবিবার থেকে শিলিগুড়ি-গ্যাংটকের বাসভাড়া ১০০ টাকা বাড়িয়ে যাত্রীপিছু ২৫০ টাকা করেছে এসএনটি। এই রুটে বেসরকারি বাসের ভাড়া ১৯০ টাকা। এসএনটির পথে হেঁটে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করছেন বেসরকারি বাস মালিকরা।
হিলি রিজিয়ন মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা বলেন, ‘সিকিমের গাড়ি চললে আমাদের পেটে লাথি পড়বে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’ অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘গণপরিবহণের বিকল্প কিছু হতে পারে না। কিন্তু রাস্তা থেকে বাস সম্পূর্ণ উঠে গেলে ক্ষতির মুখে পড়বেন যাত্রীরা। সমস্যায় পড়বেন বাসকর্মীরাও। ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিষয়টিতে নজর দেওয়া উচিত।’
ইতিমধ্যেই সমস্ত পরিবহণ সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘পাহাড় এবং সমতলের সকলের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গেও কথা বলব।’ আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।