পতিরামঃ পিতা মাতা দুইজনেই ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক। ভাই ও বৃদ্ধা ঠাকুমাকে দেখাশোনার সঙ্গে সঙ্গে পড়াশোনার খরচ জোগাতেই গড়ে চলেছেন প্রতিমা। একসময়ে ছেলেবেলায় শখের কারণে শুরু করা প্রতিমা গড়ার কাজ। আর আজ তার উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম মণিপুর এলাকার যুবক গৌরব বর্মণের।
সাত বছর আগে বাবা ও মা জীবিকার সন্ধানে চলে যান হরিয়ানায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে। বাড়িতে থেকে যায় সে ও তার ভাই ও বৃদ্ধা ঠাকুমা। গত সাত বছর ধরেই ঠাকুমা ও ছোটো ভাইকে দেখাশোনার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন মণিপুর এলাকার যুবক গৌরব বর্মণ। বছর বাইশের গৌরব বর্তমানে এমএ করছেন। ভাই পতিরাম কলেজে পড়াশোনা করে। ঠাকুরমার বয়স বর্তমানে পঁচাত্তর, ঘরে রান্নার কাজ তিনিই সামলান। ঠাকুরমার কাজে হাত লাগানো তো রয়েছেই সঙ্গে বাজার ঘাট থেকে রেশন সবটাই দুই ভাই মিলে করতে হয়। হরিয়ানা থেকে বাবা ও মা নিয়মিত টাকা পাঠান। বছর অন্তে একবার করে ঘুরেও যান। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে পরিবার ও ভাইয়ের পড়াশোনা চালানোর পরে নিজের উচ্চ শিক্ষার সমস্ত খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় গৌরবকে। গৌরব তার উচ্চ শিক্ষার খরচ জোগাতে গত চার বছর ধরে প্রতিমা তৈরির অর্ডার নিচ্ছেন।
একসময়ে ছেলেবেলায় শখের বশে নিজের হাতেই গড়তেন প্রতিমা। আজ উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সেই শখকেই পেশায় পরিনত করেছেন তিনি। গৌরব জানান, ‘পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে যেহেতু প্রতিমা গড়ি, তাই সবসময় সব অর্ডার নিতে পারি না আমি। যেটুকু অর্ডার নিই তাতে আমার পড়াশোনার খরচ উঠে যায়। সময় দিতে পারলে আরও অনেক অর্ডার নিতে পারতাম। তবে পড়াশোনা ও বাড়ির বাজারঘাট র্যাশন এইসবে অনেকটাই সময় চলে যায়। ভাইও হাতে সাথে অনেকটাই করে। ঠাকুমাও রান্না করেন। তবে এইসব করতে গিয়ে নিজের শখের নাট্য চর্চার সঙ্গে সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছি।’