পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: তিস্তার বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা রিপোর্ট জমা দিলে বোর্ড বিবেচনা করবে। বুধবার কালিম্পংয়ের এক বেসরকারি হোটেলে ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডের বৈঠকে তিস্তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম থেকে সমস্যার বিষয় তুলে ধরার পর এই আশ্বাস দিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান রণবীর সিং। অন্যদিকে পাহাড়ি এলাকার ঝরনার জল ধরে রাখার পৃথক পরিকল্পনা রূপায়ণে এবার গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকেও আমন্ত্রিত সদস্য করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সিকিমের একটা অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি পথে তিস্তা অনেক গতিপথ পরিবর্তন করে বিপজ্জনক আকার নিয়েছে। সিকিম রাজ্যের তরফে বোর্ডের বৈঠকে এই প্রসঙ্গটি তুলে ধরা হয়। পশ্চিমবঙ্গের তরফে উত্তর-পূর্ব সেচ বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক নিজেদের বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজের উপর বক্তব্য তুলে ধরেন। সিকিম থেকে নেমে আসা তিস্তা সমতলে কীভাবে নদীবক্ষে পুরু চড়া ফেলছে। নদীর গভীরতা হারিয়েছে। তা তুলে ধরেন। এদিন বোর্ডের চেয়ারম্যান অবশ্য সমস্ত বিষয় বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে কালিম্পং ও দার্জিলিং পাহাড়ের ঝোরার জল সংরক্ষণ করার নতুন প্রকল্প আনতে চলেছে বোর্ড। এতে জলসংকট কমবে। পানীয় ও চাষের উপযোগী হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সেচ দপ্তর বা মাইনর ইরিগেশন দপ্তর এই বিষয়ে কিছুই করতে পারবে না বলে জানানো হয়। কারণ দুই পাহাড়ি জেলা জিটিএ’র অধীন। তখন জিটিএ-কে বোর্ডের আমন্ত্রিত সদস্য করার প্রস্তাব এলে বোর্ড জানায় যে জিটিএ-কেও বোর্ডে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আমাদের রাজ্য ও সিকিমের কাছে নির্দিষ্ট করে প্রকল্প রিপোর্ট চেয়েছে বোর্ড। আমরা সিকিমের সঙ্গে আলোচনা করেছি এই বিষয়ে। ডিপিআর জমা করা হবে। তারপর বোর্ড সেটি বিবেচনা করে দেখবে। তবে মেখলিগঞ্জের কাছে বাংলাদেশ সীমান্তে তিস্তার উপর ১১ কোটি টাকার ডিপিআর বন্যা নিয়ন্ত্রণের উপর জমা দেওয়া আছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
এদিনের বৈঠকে ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়াও যুগ্ম সচিব জলমন্ত্রক, বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান, ফিন্যান্স সচিব সহ অন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি তিন মাস অন্তর বোর্ড রিভিউ মিটিং করার কথা জানিয়েছেন।