কোচবিহার: কয়েকদিন ধরেই কোচবিহারের রাস্তাঘাটে নজরে পড়ছে কিছু মোটরবাইকের নম্বর প্লেটে ব্ল্যাক টেপ দিয়ে নম্বরের যে কোনও একটি সংখ্যা ঢেকে রাখা হয়েছে। সাগরদিঘি চত্বর হোক কিংবা সুনীতি রোড। যে এলাকায় কমবয়সিদের দ্রুতগতিতে মোটরবাইক নিয়ে চলাচল করার প্রবণতা যেখানে বেশি সেখানেই এই ধরনের দৃশ্য নজরে পড়ছে। কিন্তু নম্বর প্লেটে ব্ল্যাক টেপ লাগানোর কারণ কী? খোঁজ নিতেই বেরিয়ে এল আসল কারণ।
হেলমেট না পরলে কিংবা কাগজপত্র ঠিক না থাকলে, এখন রাস্তায় সেই মোটরবাইক আটকে জরিমানা করার প্রবণতা কমে গিয়েছে। প্রযুক্তির সাহায্যে এখন কোচবিহারের ট্রাফিক পুলিশ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চলন্ত মোটরবাইকের নম্বর প্লেট স্ক্যান করে নথিভুক্ত থাকা নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে জরিমানার চিঠি পাঠিয়ে দিচ্ছে। সেই জরিমানার হাত থেকে বাঁচতেই নম্বর প্লেট ঢেকে রাখছে কেউ কেউ। যা দেখে পুলিশেরও চক্ষু চড়কগাছ। অবশ্য তাদের রেয়াত করা হচ্ছে না। চিহ্নিত করে জরিমানার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোপালকৃষ্ণ মিনার কথায়, ‘জরিমানা এড়ানোর জন্য নম্বর প্লেটে ব্ল্যাক টেপ লাগিয়ে রাখার দৃশ্য নজরে পড়েছে। তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
প্রথম ঘটনাটি সাগরদিঘি চত্বরের। সেখানে কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন ছিলেন। রাস্তা দিয়ে যে মোটরবাইক যাচ্ছিল সেগুলির নম্বর প্লেট স্ক্যান করছিলেন তাঁরা। যেসব মোটরবাইকের কাগজপত্রে অসংগতি রয়েছে কিংবা চালক হেলমেট পরেননি তাঁদের ফোন নম্বরে জরিমানার এসএমএস পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হঠাৎ করেই এক কিশোর মোটরবাইক নিয়ে যাচ্ছিল। তার নম্বর প্লেট স্ক্যান করতে গিয়ে এক পুলিশকর্মী দেখলেন তা হচ্ছে না। ভালো করে নজর করতেই দেখা গেল তার নম্বরের একটি সংখ্যা ব্ল্যাক টেপ দিয়ে ঢাকা রয়েছে। পুরো নম্বর স্ক্যান না হওয়াতে অনলাইনের মাধ্যমে জরিমানাও করা যাচ্ছে না। ওই পুলিশকর্মী তখন দূরে থাকা কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশকে মোটরবাইকচালককে থামাতে বললেন। তাঁরা মোটরবাইক থামানোর পর চালককে জরিমানা করা হয়। সেইসঙ্গে খুলে ফেলা হয় ব্ল্যাক টেপ। অনলাইনের মাধ্যমে জরিমানা এড়াতেই যে সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছিল ওই কিশোর তাও স্বীকার করে নিয়েছে।
পরের ঘটনাটি সুনীতি রোডে। একটি বহুজাতিক বিপণন সংস্থার পাশে রাস্তার উপরেই বেশ কিছু মোটরবাইক রাখা ছিল। ‘নো পার্কিং জোন’-এ মোটরবাইক রাখায় নম্বর প্লেট স্ক্যান করে অনলাইনের মাধ্যমে জরিমানা করছিলেন ট্রাফিক পুলিশ। দেখা যায় একটি মোটরবাইকের নম্বরের একটি অংশ সেই একই উপায়ে ব্ল্যাক টেপ দিয়ে ঢাকা। এরপর কিছুক্ষণের চেষ্টায় বাইক মালিককে খুঁজে আনা হয়। তাকেও জরিমানা করা হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জরিমানা করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। প্রত্যেকে যাতে নিয়ম মেনে যানবাহন চালায় সেজন্য পথসুরক্ষায় জোর দেওয়াই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। তাই যারা অবৈধভাবে নম্বর প্লেট ঢেকে রাখছে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।