অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: অসুস্থ হলে ছুটে যেতে হয় তাঁদের কাছেই। তারপরেও চিকিৎসকদের নিয়ে নানা ক্ষোভ, নানা অভিযোগ। মন দিয়ে রোগী না দেখার অভিযোগ। হাসপাতালের বদলে প্রাইভেট চেম্বারে বেশি সময় দেওয়ার অভিযোগ। প্যাথ ল্যাবের কমিশনের লোভে বেশি বেশি টেস্ট করতে দেওয়ার অভিযোগ, আরও কত কী। তবে এসবের থেকে একেবারে উলটোদিকে দাঁড়িয়ে উদয় ডাক্তার। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) উদয় দাস প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন ঠিকই, তবে কোনও ভিজিট নেন না। আলিপুরদুয়ার শহরের বড়বাজার এলাকায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিসে প্রতি শনিবার তাই রোগীদের ভিড় উপচে পড়ে।
উদয় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা (Homeopathy Treatment) করেন। বর্তমানে তিনি আয়ুষ বিভাগের জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকও। আগে জেলা হাসপাতালেই বসতেন। এখন শুধু তপসিখাতা আয়ুষ হাসপাতালে (Tapsikhata Ayush Hospital) রোগী দেখেন সপ্তাহের মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। আর শনিবার তো বিনামূল্যে প্রাইভেট প্র্যাকটিস রয়েছেই।
অনেক ডাক্তারের বিরুদ্ধেই তো অভিযোগ, আউটডোরে তাঁরা মন দিয়ে চিকিৎসা করেন না। অথচ উদয় যখন জেলা হাসপাতালে বসতেন, তখন অন্য চিকিৎসকদের আউটডোর দুপুর দুটোয় বন্ধ হয়ে গেলেও তাঁর আউটডোর চলত বিকেল পর্যন্ত। রুমি সাহা নামে উদয়ের এক রোগী বলেন, ‘অন্য চিকিৎসকরা প্রাইভেট চেম্বারে যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে অনেকটা সময় নিয়ে রোগী দেখেন, উদয় ডাক্তার বিনামূল্যে ততটা মনোযোগ দিয়েই রোগী দেখেন। সবার সঙ্গেই খুব ভালো ব্যবহার করেন।’
আদতে হুগলি জেলার তারকেশ্বরের বাসিন্দা উদয় ২০০২ সালে আলিপুরদুয়ারে আসেন। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের পাঁচকোলগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁর প্রথম কাজ। এরপর ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে জেলা হাসপাতালে বদলি হয় তাঁর। বছর দুয়েক আগে আয়ুষ বিভাগের জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দায়িত্ব পান।
উদয় নিজে অবশ্য এতে বিশেষ কৃতিত্ব দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘আগে তো আমি জেলা হাসপাতালে রোগী দেখতাম। এখন দেখি না। অনেকেই বলতেন, কোনও এক জায়গায় বসতে। ওই সংগঠন যখন প্রস্তাব দিল, তখন রাজি হয়ে যাই রোগী দেখতে ভালো লাগে বলেই।’