সিদ্ধার্থশংকর সরকার,পুরাতন মালদা: পুরাতন মালদা শহরের হোটেল ও লজগুলিতে বহিরাগত মহিলাদের অস্বাভাবিক আনাগোনা বাড়ায় উদ্বিগ্ন শহরবাসী। সম্প্রতি নারায়ণপুরের একটি হোটেলে মধুচক্রের পর্দা ফাঁস হওয়ার পর এই উদ্বেগ আরও জোরালো হয়েছে। শহরজুড়ে অবৈধ কার্যকলাপের আশঙ্কায় পুলিশ প্রশাসনের কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শহরের মঙ্গলবাড়ি এলাকায় একাধিক হোটেল ও লজ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সমস্ত এলাকায় ইদানীং কমবয়সি ছেলেমেয়েদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। যা শহরবাসীর মনে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। শুধু হোটেল বা লজ নয়, শহরের বড় বড় বিল্ডিংগুলিতে ব্যবসার আড়ালে অবৈধ কার্যকলাপ চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
পুরাতন মালদা শহরের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা সুজিত দাস নারায়ণপুরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘নারায়ণপুরের হোটেলে যা ঘটেছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। আমাদের এলাকা মঙ্গলবাড়িতেও অনেক হোটেল, লজ, বডি মাসাজ সেন্টার ও ট্যাটু সেন্টার রয়েছে। সেখানে কমবয়সি ছেলেমেয়েদের নিয়মিত যাতায়াত দেখা যায়। অনেক বহিরাগত মুখে মাস্ক লাগিয়ে আসেন।’
এলাকার মানুষের দাবি, ব্যবসার আড়ালে যদি কোনও অবৈধ কাজ চলে, তাহলে পুলিশকে অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। নারায়ণপুরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যদি মঙ্গলবাড়ির মতো জনবহুল এলাকায় ঘটে, তাহলে পুরাতন মালদা শহর কলুষিত হবে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা শিবসেনার জেলা সভাপতি উত্তমকুমার নন্দী বলেন, ‘নারায়ণপুরের ঘটনা আমাদের কাছে কলঙ্কিত। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা শহরে চাইনা। কান পাতলে শোনা যায় শহরের হোটেলেও অবৈধ কার্যকলাপ হয়। প্রশাসনকে অবিলম্বে তদন্ত করে দেখা উচিত।’
এ বিষয়ে মালদা থানার পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের উদ্বেগের বিষয়টি তারা অবগত এবং তাদের দাবি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে। অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে এবং এই অভিযোগগুলির সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে মালদা বিধানসভার বিজেপির বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহার মন্তব্য, ‘হোটেলে মধুচক্রের বিষয়টি পুলিশ জানে। তারা হোটেল মালিকদের সঙ্গে রফা করে হপ্তা নিয়ে এসব কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা এসব অসামাজিক কাজের বিরোধিতা করছি। পুলিশ চাইলে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে পারে। কিন্তু তারা সেটা করে না।’
শহরবাসীর এই উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে হোটেল, লজ এবং অন্যান্য সন্দেহভাজন স্থানগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হবে কিনা, এখন সেটাই দেখার বিষয়। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে শহরের শান্ত পরিবেশ নষ্ট হতে পারে।