সাতসকালে বাজির দোকানে ভয়াবহ আগুন ইংরেজবাজারে, অগ্নিকাণ্ডে ঝলসে মৃত বেড়ে ২

মালদাঃ এগরা বজবজের পর এবার মালদা! মঙ্গলবার সকালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে মালদার ইংরেজবাজারে একটি বাজির দোকানে। এই অগ্নিকাণ্ডে ঝলসে মৃত্যু হল ২ জনের। এদিন সকাল ৬টা নাগাদ রথবাড়ি এলাকায় নেতাজি পুর বাজারে বাজির দোকানে আগুন লাগে। দোকানে মজুত থাকা বাজিতে একের পর এক বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায় বলে স্থানীয়দের দাবি। দোকানে প্রচুর পরিমানে বাজি মজুত করা ছিল। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের চারটি দোকানে। ঘটনাস্থলে রয়েছে দমকলের ৫টি ইঞ্জিন। গত সাত দিনে রাজ্যের চারটি জায়গায় বাজি সংক্রান্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ১৬ জনের।

মালদা মার্চেন্টস চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুন্ডু জানান, নেতাজী পুরবাজারে রয়েছে বেশকয়েকটি বাজির গোডাউন। রয়েছে কার্বাইড মজুতের ঘর। আজ সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ কার্বাইড আনলোডিংয়ের কাজ চলছিল। একজন শ্রমিকের মাথা থেকে কার্বাইডের ড্রাম আচমকাই পরে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের আগুন গিয়ে লাগে বাজির গোডাউনে। এরপর বাজির শব্দে কাঁপতে শুরু করে গোটা বাজার। আতঙ্কিত ব্যাবসায়ীরা নিজেদের দোকান বাঁচাতে বাজারে ছুটে আসে। নিমেষে এই আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় দমকলকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের ৫টি ইঞ্জিন। দোকানের শাটার ভাঙে দমকলকর্মীরা। ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক ব্যক্তির ঝলসানো দেহ। মৃতের নাম রাজু ঋষি বলে জানা গিয়েছে। অপর মৃত ব্যাক্তির নাম বাবলু। পেশায় তিনি ভ্যান চালক।

এলাকাটি ঘিঞ্জি থাকার কারণে পাশের দোকান গুলিতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের সঙ্গে হাত লাগান স্থানীয়রাও। ঘটনাস্থলে ৫টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে খবর। আগুন নেভাতে গিয়ে ধোঁয়ায় এক দমকল কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে খবর।

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছন ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। বাজির দোকানের লাইসেন্সের প্রশ্ন উঠলে, তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন তাঁরা। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাই লক্ষ্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গরমিল চোখে পড়লে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এত ঘিঞ্জি বাজারে এ ভাবে বাজি মজুত করা কি আদৌ বৈধ, উঠছে প্রশ্ন। ওই দোকানের লাইসেন্স ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।

ইংরেজবাজারের এই ঘটনায় ফের পুলিশি নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ এই নিয়ে গত ছয় দিনে, রাজ্যের চার জেলায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাণ গেল ১৬ জনের।  এর পাশাপাশি বস্তা বস্তা বিস্ফোরকও উদ্ধার হয়ে চলেছে। প্রায় ৪০ হাজার কেজি বেআইনি বাজি উদ্ধার হয়েছে।