শিলিগুড়িঃ স্কুল বাসের ধাক্কায় ফের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল শিলিগুড়িতে। এবারে মৃত্যু হল নবনীতা মোদক বর্মন (৩২) নামের এক মহিলার। পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে রাজীব মোড়ের কাছে পেশায় ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার ওই মহিলা স্কুটি চালিয়ে স্টেশন ফিডার রোড থেকে নিজের বাড়ি নবগ্রামে ফিরছিলেন। শিলিগুড়ি থানার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রাজীব মোড় এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। তাঁর স্কুটির পেছনে ধাক্কা মারে একটি টোটো। টোটোর ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুটি নিয়ে পড়ে যান তিনি। সেই সময় পেছনে আসা একটি স্কুল বাসের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন নবনীতা। এরপরই স্থানীয়রা গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এদিন রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। সেখানেই রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ মৃত্যু হয় নবনীতার।
বুধবার সকালে দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে পাঠায় পুলিশ। এদিন বিকেলে দেহ নবগ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়ে মৃতের পরিবার। মৃতের প্রতিবেশী তরুণ সরকার বলেন, “শহরের অনিয়ন্ত্রিত টোটো ও স্কুলবাসের দাপটের কারণেই চলে গেল একটি তরতাজা প্রাণ। এরপরেও যদি প্রশাসনের হুঁশ না ফেরে তাহলে নবনীতার মতো ঝড়ে যাবে আরও অনেক প্রাণ।”
এদিকে, দুর্ঘটনার পরেই ওই স্কুল বাসটিকে আটক করেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলবাসের চালককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার পরে ফের একবার স্কুল বাসের দৌরাত্ম্যের বিষয়টাই সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগেই ভেনাস মোড়ের কাছে অতিরিক্ত গতিতে চলা স্কুল বাসের মুখে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এই গৃহ শিক্ষিকার। যাকে কেন্দ্র করে গোটা শহরে স্কুল বাসের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল শহরবাসি। স্কুল বাসগুলো নিয়ন্ত্রণের দাবিও করা হয়েছিল। এরপর ট্রাফিকের তরফে নানা উদ্যেগও নেওয়া হয়েছিল। যদিও এরমধ্যেই ফের একবার স্কুল বাসের ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনা সামনে এল। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি (ট্রাফিক) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘স্কুল বাসগুলো যাতে নিয়ন্ত্রিত গতিতে চলে, সেব্যাপারে ইতিমধ্যেই স্কুল বাস চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বাসগুলোর ফিটনেস সহ যাবতীয় জিনিসগুলো যাতে ঠিক থাকে, সেই বিষয়গুলোতে বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। আমরা এই বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে দেখছি।’