উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রায় ২০ বছর পর একটি খুনের মামলার কিনারা করল দিল্লি পুলিশ। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রাক্তন এক নৌসেনা অফিসারকে। এক আত্মীয় এবং দুই শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে। যদিও ধৃত এই প্রাক্তন নৌসেনা অফিসার এতদিন পুলিশের খাতায় মৃত হিসেবেই ছিলেন। তদন্ত শেষে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত মৃত নয় জীবিতই আছে। খুনের পাশাপাশি চুরিরও অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
তিনটি খুনের মামলায় ২০ বছর পর মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীকে গ্রেপ্তার করল দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ। হরিয়ানার বাসিন্দা ওই অভিযুক্তকে নজফগড়ের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম বালেশ কুমার। গ্রেপ্তার এড়াতে এতদিন নাম বদলে ওই প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী রেখেছিলেন আমন সিং। পরিচয় লুকিয়ে করে তিনি দিল্লির নজফগড়ে বসবাস করছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে দিল্লির বাওয়ানা এলাকায় টাকার জন্য নিজের শ্যালক রাজেশ ওরফে খুশিরামকে হত্যা করেছিল বালেশ কুমার। এই খুনে তাকে সহযোগিতা করেন তাঁর ভাই সুন্দরলাল। রাজেশের স্ত্রীর সঙ্গে বালেশের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই ঘটনায় সুন্দরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও বালেশ পালিয়ে যায়।
পুলিশের বিশেষ কমিশনার (অপরাধ) রবীন্দ্র যাদব জানান, নৌসেনা থেকে অবসর গ্রহণের পর বালেশ পরিবহনের ব্যবসা শুরু করে। খুনের পর নিজের ট্রাকে করে রাজস্থানে পালিয়ে যান। নিজেকে মৃত প্রমাণ করতে নিজের ট্রাকেই আগুন ধরিয়ে দেন। শুধু তাই নয় নিজের দুই শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যা করে বালেশ। সেখান থেকে পালিয়ে যায় বালেশ। পুড়ে যাওয়া ট্রাকের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ট্রাকটি বালেশ কুমারের। সেই গাড়ি থেকে দুটি দ্বগ্ধ দেহ দেখে পুলিশ অনুমান করে বালেশেরও মৃত্যু হয়েছে। বালেশের পরিবারের সদস্যরাও একটি মৃতদেহ বালেশের বলে শনাক্ত করে। এরপর স্বাভাবিকভাবেই রাজস্থান পুলিশ প্রধান সন্দেহভাজনকে মৃত ভেবে মামলাটি বন্ধ করে দেয়।
এদিকে, বালেশ পঞ্জাবে পালিয়ে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় জাল পরিচয় তোইরি করে নিজের নাম পরিবর্তন করে আমন সিং রাখেন। জানা যায়, বালেশ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী থেকে তাঁর স্ত্রী বিমা এবং পেনশন পেয়েছিলেন। এছাড়াও, ট্রাকের জন্যও বিমা পেয়েছিলেন। তারপরে বালেশ তাঁর পরিবারের সঙ্গে দিল্লির নজফগড়ে চলে আসেন এবং তাঁদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার তাঁকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বালেশ তাঁর আত্মীয় এবং বিহারের দুই শ্রমিককে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।