উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ চিত্র পাল্টেছে আফগানিস্তানে। তালিবান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। আফগানিস্তানের মাটিতে কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর জায়গা নেই। আগে যেসব গোষ্ঠী সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছিল সেই সব জঙ্গিগোষ্ঠীকে দেশ থেকে নির্মূল করা হয়েছে। ভারত সফরে এসে এমনই দাবি করেছেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। সেই পথ সব দেশকে অনুসরণ করার বার্তা দিয়েছেন মুত্তাকি।
ছয়দিনের সফরে শুক্রবারই ভারতে এসেছেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। এদেশে এসেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুত্তাকি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে মুত্তাকি বলেন, “লশকর-এ-ত্যায়বা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীকে আফগানিস্তান থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। ২০২১ সালে যে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালিয়েছিলাম, সেই আফগানিস্তান বদলে গিয়েছে।’’ মুত্তাকির পরামর্শ, ‘‘শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে আফগানিস্তান যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা অনুসরণ করা উচিত অন্য দেশগুলিরও।’’
শুক্রবার পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর দাবি করেছে, আফগানিস্তান সীমান্তে অভিযান চালিয়ে পাক সেনা ৩০ জন টিটিপি বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে। এই প্রসঙ্গে জয়শঙ্করের পাশে বসে আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর দাবি, ‘‘আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানের এ ধরনের কাজকে আমরা ভুল বলে মনে করি। এ ভাবে সমস্যা সমাধান হয় না। আমরা আলোচনার জন্য উন্মুক্ত।’’ এরপরেই পাকিস্তানকে সরাসরি নিশানা করে মুত্তাকি বলেন, ‘‘ওদের নিজেদের সমস্যা নিজেদের সমাধান করা উচিত। ৪০ বছর পর আফগানিস্তানে শান্তিপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। উন্নতির পথে হাঁটছে। কারও এতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আফগানিস্তান এখন একটি স্বাধীন জাতি। আমাদের দেশে যদি শান্তি থাকে, তবে কেন মানুষ সমস্যায় পড়বেন?’’ মুত্তাকি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, ‘‘আফগানদের সাহস এবং ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। যদি কেউ এটা করতে চায়, তবে তাদের সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা এবং নেটোকে জিজ্ঞাসা করা উচিত। তারা ব্যাখ্যা করবে যে আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলা ভাল নয়।’’ মুত্তাকির দাবি, ‘‘কাবুলও চায় ইসলামাবাদের সঙ্গে আরও ভাল সম্পর্ক গড়তে, কিন্তু তা কখনই একতরফা হতে পারে না।’’
ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতির কথাও জানান মুত্তাকি। ভূমিকম্পের জেরে বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের জন্য ভারত যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল, সেই জন্য নয়াদিল্লির প্রশংসা করেন তিনি।
পাকিস্তানকে সতর্কবার্তা দিলেও ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুত্তাকি। তাঁর কথায়, ‘‘আফগানিস্তান ভারতকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে দেখে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বাণিজ্যের ভিত্তিতে সম্পর্কের উন্নতি চায়।’’

