জলপাইগুড়ি: চিকিৎসার গাফিলতিতে ক্রমেই আশঙ্কাজনক হচ্ছে রোগীর শারীরিক অবস্থা। এই মর্মে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জমা দিল রোগীর পরিবার। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হওয়া ওই রোগী বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে (North Bengal Medical College) সিসিইউতে (CCU) ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
ঘটনার সূত্রপাত গত ডিসেম্বর মাসের ২৯ তারিখ। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদরব্লকের নন্দনপুর এলাকার বাসিন্দা উত্তম মাতব্বর তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী শান্ত্বনা রায়কে ভর্তি করেছিলেন জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগে। যেদিন তিনি ভর্তি করেছিলেন ওই রাতেই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন শান্ত্বনা। সন্তানের জন্মের পর দিন পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। পরিবারের দাবি, সেই সময় তাঁকে দুটি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। সেই মুহুর্তের জন্য যন্ত্রণা কমে গেলেও পরবর্তীতে শান্ত্বনার শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথমে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের সিসিইউতেই শান্ত্বনাকে ভর্তি করা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চলতি মাসের ২ তারিখ শান্ত্বনাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের সিসিইউতে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
স্বামী উত্তম মাতব্বর বলেন, ‘আমি যখন আমার স্ত্রীকে প্রথমদিন জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করেছিলাম সেই সময় পুরো সুস্থ ছিল। পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরেও আমাদের সকলের সঙ্গে ভালো মতো কথা বলেছে। কিন্তু সন্তান্ত জন্মের পর যেদিন প্রথম পেটের যন্ত্রণা হয় তারপর থেকেই ওর শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের সিসিইউতে ভেন্টিলেশনে রয়েছে। আমার মনে হয়েছে জলপাইগুড়ি প্রসূতি বিভাগে ভর্তি থাকাকালীন কোথাও একটা চিকিৎসার গাফিলতি হয়েছে। যার কারণে দিনে দিনে আমার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গে স্যালাইন নিয়ে যে ঘটনা ঘটল এখানেও আমার স্ত্রীর ক্ষেত্রে তেমন কিছু হল কিনা বুঝতে পারছি না। পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি মেডিকেল কলেজে কর্তৃপক্ষ এবং কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলাম।’
অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি (MSVP) ডাঃ কল্যাণ খান বলেন, ‘আমি শুনেছি ওনারা একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আমি তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করতে বলেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এলেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’