নিশিগঞ্জ: ফুলের পরাগমিলনে মৌমাছির যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তা আজও বোঝেন না অনেক চাষি! তাঁরা ভাবেন, মৌমাছি ফুলের মধু খেয়ে নিলে ফলনের ক্ষতি হবে। সর্ষের পর এখন আমের মুকুল এসেছে। কোচবিহারে লিচুর বাগানও হচ্ছে। ফলে অধিক মধু চাষে লাভের সম্ভাবনা রয়েছে কোচবিহার জেলায়। কৃত্রিম বাক্সে মৌমাছি পালন ও মধু প্রক্রিয়াকরণ করে জীবিকানির্বাহ সম্ভব। জাতীয় মৌমাছি বোর্ডের আর্থিক সাহায্যে কোচবিহার-১ ব্লকের সাতমাইলে সূচনা হল ৭ দিনের মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ।
খেতের ধারে সারি দিয়ে সাজানো থাকে বাক্স। বাক্সের গায়ে ছোট ছিদ্র থাকে মৌমাছিদের চলাচলের পথ হিসেবে। প্রায় ৪ বর্গফুটের বাক্সের ভিতরে লোহার জালিতে বাঁধা থাকে কৃত্রিম মৌচাক। সেখানেই ফুলের মধু সংগ্রহ করে রাখে মৌমাছিরা। যদিও প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা না থাকায় কোচবিহার জেলায় সেভাবে জনপ্রিয় হয়নি এই মধু চাষ। এদিন ২৫ জন কৃষককে নিয়ে মৌমাছি পালনের যৌথ প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করল কোচবিহার কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র ও সাতমাইল সতীশ ক্লাব।
প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধন করে কোচবিহার কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের শস্য বিজ্ঞানী ডঃ শংকর সাহা বলেন, ‘মৌমাছি পালন করে যেমন স্বনির্ভর হতে পারবেন কৃষকরা, তেমনি মৌমাছি ফুলের পরাগসংযোগ ঘটিয়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাই পরিবেশ বান্ধব এই পেশা বিকল্প কর্মের দিশা দেখাতে পারে অসংখ্য তরুণকে।’
মধু, মোম ও অন্যান্য মূল্যবান প্রসাধনী প্রাকৃতিক পণ্য এই মৌমাছি থেকে পাওয়া যায়। প্রশিক্ষণে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ২৫ জন তরুণ অংশ নিয়েছেন। বহুজাতিক সংস্থাগুলি আজকাল এই মধু বিক্রির ব্যবসায় নেমেছে। এক সময়ের চাকভাঙা মধু এখন সেভাবে পাওয়া যায় না। মধুতে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় সারাবছর চাহিদা থাকে মধুর। তাই কৃত্রিম উপায়ে চাষ এখন লাভজনক। সতীশ ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, ‘সাতদিনের হাতে কলমে এই প্রশিক্ষণ শিবিরে ফার্মার্স প্রোডিউসার সংস্থাগুলিকেও যুক্ত করা হয়েছে।’