পার্থসারথি রায়, সিতাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিতাই বিধানসভা এলাকায় দলবদল নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। গত বুধবার সিতাইয়ের গোসানিমারিতে বিজেপির কর্মীসভা হয়। বিজেপির দাবি, সেই সভায় কেন্দ্রীয স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের হাত ধরে দিনহাটা-১ ব্লকের তণমূলের একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যা নিয়ে জেলার রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের দিনহাটা-১(এ) ব্লক কমিটির তরফে দাবি করা হয়, বিষযটি পুরোপুরি সাজানো ঘটনা। এদিন গোসানিমারি বাজার সংলগ্ন তণমূলের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের দিনহাটা-১(এ) ব্লক সহ সভাপতি মিঠুন চক্রবর্তী সহ অন্যরা। সেখানে তণমূল নেতারা জানান, যাঁরা দলবদল করেছেন বলে বিজেপি দাবি করছে, তাঁদের প্রায় দু’বছর আগেই তণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সিতাই বিধানসভার বিজেপির কনভেনার দীপক রায় বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের ভাঙন শুরু হওয়ায় তৃণমূল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কাজেই মনগড়া কিছু বলে এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল নেতারা।’
এদিন তণমূলের তরফে বলা হয়েছে, বুধবার দলবদল নিয়ে যে কজন তণমূলের পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের নাম বলা হচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনের পর তাঁদের ২০২১ সালের ২৭ জুন দলবিরোধী কাজের জন্য তণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তণমূল নেতাদের আরও দাবি, যে চারজনের দলবদলের কথা বলা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে শুধুমাত্র গোসানিমারি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বিনোদচন্দ্র রায় উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে কারও স্বামী, কারও ছেলে আবার কারও শ্বশুর মঞ্চে উঠে বিজেপির পতাকা হাতে নেন।
মিঠুন চক্রবর্তীর বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের পর দলের তরফে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছিল ওই চারজন ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। তাই দল থেকে তাঁদের বহিষ্কার করে রাখা হয়েছিল। কাজেই কে, কোথায় গেল সেটাতে দলের গুরুত্ব দেবার কিছু নেই। নির্বাচনের আগে বিজেপি মানুষকে মিথ্যা চমক দিচ্ছে।
বিনোদবাবু বৃহস্পতিবার বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে তৃণমূলের জন্য কাজ করেছি। কিন্তু তারপরও আমাকে বিজেপির হয়ে কাজ করার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দলীয কাজকর্ম থেকে সরিয়ে রাখা হল। অথচ যাঁরা বিজেপির লোক, তাঁদের নিয়ে বুথ কমিটি গঠন করল তৃণমূল। বাধ্য হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চুপচাপ থাকলাম। অবশেষে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।