বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫

Alipurduar | ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তবুও তো মা…

শেষ আপডেট:

ভাস্কর শর্মা, ফালাকাটা: দুজনেরই হাতে চকোলেট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওরা তাতে এতটুকু খুশি নয়। দুই বোনের একটাই প্রশ্ন, ‘মা কোথায়?’ শেষমেশ মাকে তাদের সামনে হাজির করা হল। দেখেই দুই খুদের অঝোরে কান্না। মা আর মেয়েদের অবশ্য মিলন হল না। মায়ের কোলে উঠে তাঁর আদর পাওয়াও হল না। আদালতে তোলা হবে বলে ওদের মাকে সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। দুই বোনের আবারও কান্না শুরু। মাকে নিয়ে ওরা বাড়ি ফিরে যাবে বলে বারবার বায়না জুড়ে দিল। আত্মীয়স্বজনরা কোনওমতে তাদের সামলালেন। শুক্রবার সকালে ফালাকাটা থানা এমনই করুণ দৃশ্যের সাক্ষী থাকল।

মাসখানেক আগে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) ফালাকাটা থানার (Falakata Police Station) পুলিশের কাছে একটি মিসিং ডায়েরি জমা পড়ে বাড়ি থেকে তাদের মায়ের নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওই মহিলা কারও সঙ্গে হায়দরাবাদে চলে গিয়েছেন। সেটা মাসখানেক আগের ঘটনা। মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে পরে জানা যায় তিনি তামিলনাডুতে রয়েছেন। পরে ফালাকাটা থানার পুলিশ সেখানকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিশ ফালাকাটা থেকে তামিলনাডুতে যায়। সেখান থেকে ওই মহিলাকে নিয়ে এদিন পুলিশ ফালাকাটায় ফেরে।

মা যে এদিন ফিরে আসছেন তা পাঁচ ও আট বছর বয়সি ওই দুই খুদে জানতে পেরেছিল। দিদার সঙ্গে দুজনে এদিন সকালেই থানায় হাজির হয়েছিল। মাকে দেখবে বলে পুলিশকাকুর টেবিলের সামনে হামলে পড়ে বায়না জুড়ে দিয়েছিল। সেই পুলিশকাকু ওদের হাতে চকোলেট দিয়ে দুজনকে শান্ত করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ওরা ওদের বায়না থামালে তো! শেষপর্যন্ত পুলিশ ওদের মাকে দুজনের সামনে হাজির করাল। আর তারপর কী হয়েছে তা এই প্রতিবেদনের গোড়াতেই পরিষ্কার। সন্তানদের দেখে মায়ের চোখে জল এসে গিয়েছিল। তবে তিনি কিছু বলতে চাননি। ফালাকাটা থানার আইসি অভিষেক ভট্টাচার্য বললেন, ‘আমার নিজের সন্তান আছে। তা‌ই মাকে ছাড়া সন্তানের কী সমস্যা সেটা সহজেই বুঝতে পারি। তামিলনাডুতে দ্রুত টিম পাঠিয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।’

ওই মহিলার স্বামী রাজমিস্ত্রি হিসেবে কেরলে কাজ করেন। স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ায় তিনি সন্তানদের নিয়ে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন। দুজনকে দাদু ও দিদার কাছে রেখেছিলেন। পুলিশ স্ত্রীকে ফালাকাটায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার পর তিনি অবশ্য নিশ্চিন্ত। এদিন ওই ব্যক্তি বললেন, ‘মাকে দেখতে না পেয়ে দুই মেয়ে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিল। দিনরাত কান্নাকাটি করত। পুলিশ স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনায় ভালো লাগছে। ফের ভালোভাবে সংসার করতে চাই।’

Sushmita Ghosh
Sushmita Ghoshhttps://uttarbangasambad.com/
Sushmita Ghosh is working as Sub Editor Since 2018. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.

Share post:

Popular

More like this
Related

Minor YouTuber pregnancy | নাবালিকা ইউটিউবারের সঙ্গে প্রেম-ঘনিষ্ঠতা, অন্তঃসত্বা হতেই গ্রেপ্তার প্রেমিক    

ঘোকসাডাঙ্গা: বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে অধিকাংশ যুক্ত। কেউ ইউটিউবে, কেউ...

Microfinance | ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার কর্মীদের ঝাঁটা হাতে তাড়া! মেটেলির চা বাগানে হুলুস্থুল কাণ্ড

মেটেলি: বকেয়া ঋণের কিস্তি টাকা আনতে যাওয়া মাইক্রো ফাইন্যান্স...

Mathabhanga | নিষিদ্ধ হলেও মোবাইল ফোনের যথেচ্ছ ব্যবহার! স্কুলগুলিতে নজরদারিতেই গলদ

মাথাভাঙ্গা: স্কুলে কোথাও আছে নজরদারি আবার কোথাও নেই। ডাকঘরা...

Cooch Behar | শহরে বাড়ছে ভিনরাজ্যের আনারসের চাহিদা

কোচবিহার: গরম পড়তেই শহরে ফলের দোকানগুলিতে আমের পাশাপাশি আনারসেরও...