মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

Alipurduar | বক্সায় পুরোনো তছরুপ নিয়ে নাড়াচাড়া, বাম আমলের বরাদ্দের হিসেব নেই 

শেষ আপডেট:

ভাস্কর শর্মা, আলিপুরদুয়ার: প্রায় দুই দশকের পুরোনো কথা উঠে এল মঙ্গলবার, বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) স্টাডি ভিজিটে। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল সেই পিএসি’র চেয়ারম্যান। এদিন তিনিই অভিযোগ তুলেছেন, বাম আমলে বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের দুটি কাজের ক্ষেত্রে আর্থিক কোনও হিসেব মেলেনি আজও। পিএসি’র তরফ থেকে এদিনই বন দপ্তরকে দ্রুত খরচের হিসেব পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাম আমলে বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পে বনসৃজন এবং জ্বালানি কাঠ বিক্রির জন্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রকল্প দুটি আদৌ বাস্তবায়িত হয়েছিল কি না, হয়ে থাকলে বরাদ্দ অর্থ কীভাবে খরচ হয়েছে তার কোনও হিসেব পরবর্তীতে আর মেলেনি। এদিন সুমন বলেন, ‘আমরা তাই এদিনের বৈঠক থেকে দুটি প্রকল্পের আর্থিক খরচের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি।’ বিষয়টি নিয়ে অবশ্য বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের কোনও আধিকারিকই মন্তব্য করতে চাননি। বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের ডিএফডি (পূর্ব) দেবাশিস শর্মাকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালে, তারও কোনও উত্তর দেননি।

এদিন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) সার্কিট হাইসে পিএসি’র সেই স্টাডি ভিজিট হয়। সেখানে জেলা শাসক আর বিমলা সহ বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্প ও জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বাম আমলের দুটি প্রোজেক্টের জন্য বরাদ্দ অর্থ কীভাবে খরচ করা হয়েছিল তার রিপোর্ট চাওয়া হয়। পিএসি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে বক্সায় একসময় দুটি প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছিল। আর্থিক বরাদ্দও মঞ্জুর করা হয়েছিল। একটি হল ২০০৫-২০০৬ সালে বক্সায় বনসৃজন প্রকল্প এবং তারও আগে ২০০৩-২০০৪ সালে জ্বালানি কাঠ বিক্রি প্রকল্প। এই দুটি কাজ করার জন্য বক্সা টাইগার রিজার্ভ (বিটিআর) কর্তৃপক্ষকে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, বরাদ্দ করা সেই টাকায় কত গাছ লাগানো হয়, তার কোনও হিসেব নেই। এমনকি জ্বালানি কাঠ নিলাম করে বিক্রি করার কথা ছিল। সেক্ষেত্রে নাকি ন্যূনতম দরের থেকেও কম দামে জ্বালানি কাঠ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। এমনটাই অভিযোগ।

এব্যাপারে আগেও পিএসি রিপোর্ট চেয়েছিল সংশ্লিষ্ট বনকর্তাদের কাছে। মেলেনি। এদিনও রিপোর্ট তাঁরা দিতে পারেননি।

প্রশ্ন উঠছে, এত পুরোনো দুটি প্রকল্পের হিসেবনিকেশ কি এখন হাতে পাওয়া সম্ভব? আর এতদিন সেই হিসেব যে দেওয়া হয়নি, তার পিছনে কি কোনও তছরুপের ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে? সেসময় সুষ্ঠুভাবে বনসৃজন হয়েছিল তো? এসব জানতে চাওয়া হলে সুমনরা কোনও মন্তব্য করেননি। তবে মনে করা হচ্ছে, যদি বনাধিকারিকরা সেই রিপোর্ট জমা দিতে পারেন, তবে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে।

অন্যদিকে, এদিন কেতুগ্রামের বিধায়ক তথা পিএসি’র সদস্য শেখ শাহনওয়াজ বন দপ্তরের কাছে জঙ্গল, বন্য প্রাণীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জানতে চান। সেখানে বন দপ্তরের আধিকারিকরা তাঁদের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

Sushmita Ghosh
Sushmita Ghoshhttps://uttarbangasambad.com/
Sushmita Ghosh is working as Sub Editor Since 2018. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.

Share post:

Popular

More like this
Related

Bolla Kali | চারদিনের মেলার সমাপ্তি, বিষাদভরা চোখে দেবীর বিসর্জন 

বিশ্বজিৎ প্রামাণিক, পতিরাম: চারদিনের উৎসব, ভক্তি ও আনন্দের সমাপ্তি...

Cooch Behar | মেলা ঘিরে রাস্তায় ভিড়, অচল শহর

কোচবিহার: রাসমেলায় ঘুরতে যাবেন বলে সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন...

Dinhata | ভরসা নাজিরহাট কিংবা দিনহাটা, তিন বছর তালাবন্ধ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র    

দিনহাটা: দিনহাটা-২ ব্লকের পশ্চিম মশালডাঙ্গায় প্রায় তিন বছর ধরে...

Dinhata | রেডক্রস সোসাইটি এখন পুরসভার গ্যারাজ

দিনহাটা: নয়ের দশকে দিনহাটা মহকুমায় শুরু হওয়া রেডক্রস সোসাইটির...