প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: হোলির আগে এবং উৎসবের কয়েকদিন মদ ও নানা নেশাসামগ্রী রেলপথে পাচার হয়ে থাকে। তাই আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) স্টেশনে স্টেশনে কড়া নিরাপত্তার দিকে নজর দিচ্ছে আরপিএফ। স্নিফার ডগ ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সকল যাত্রীর ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে আরপিএফের তরফে। এদিকে, চাহিদা থাকায় হোলি স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। তবে বিভিন্ন ছোট-বড় স্টেশনে নিরাপত্তার দিকটাই গুরুত্ব দিচ্ছে আরপিএফ (RPF)।
নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন আরপিএফ ইনস্পেকটর দিলীপ তিওয়ারি বলেন, ‘হোলির জন্য বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেন চলছে। একইসঙ্গে এই উৎসবে মদ ও মাদকের পাচারের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। তাই বিভিন্ন স্টেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম চত্বর এমনকি ট্রেনের কামরায় পুলিশ কুকুর দিয়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্যও একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।’
বিশেষ করে বিহারের মদ নিষিদ্ধ হতেই অসম, মেঘালয়, অরুণাচলে মদের চাহিদা বেড়েছে। অসম হয়ে সেই মদ, গাঁজা রেলপথে পাচার হয়ে থাকে। অসমগামী বড় অংশের ট্রেন আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের উপর দিয়ে যাত্রা করে বিহারে পৌঁছায়। ফলে একশ্রেণির পাচারকারী উৎসবের মরশুমে সক্রিয় হয়ে ওঠে। যাত্রী সেজে হোক কিংবা স্কুল, কলেজ পড়ুয়ার মতো পিঠ ব্যাগে সেসব পাচার করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় প্যান্ট্রি কার ও শৌচালয়ের অস্থায়ী সিলিংয়ে সেগুলি পাচার হতে দেখা গিয়েছে। অসম ও বিহারের মধ্যে সরাসরি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন যাত্রা করে। আর সেই ট্রেনেই মদ পাচার হয়ে থাকে।
বিভিন্ন সময় আরপিএফ এবং জিআরপি অবৈধ মদ পাচারের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তবে উৎসবের মরশুমে তার বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। এছাড়াও অসম-মেঘালয়ের মদ সহজলভ্য হওয়ায় লাভের অঙ্ক অনেক বেশি। তাই এই রুটে পাচারকারীরা সক্রিয় হয়। বিহারে নিত্যনতুন কৌশলে পাচার চলে। তাই এবার হোলির অনেক আগে থেকেই পথে নেমেছে আরপিএফ।
নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন, আলিপুরদুয়ার জংশন, নিউ কোচবিহার স্টেশন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে তল্লাশি চলছে আরপিএফের। এখনও পর্যন্ত তেমন মাদকের খোঁজ মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে। আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিনা টিকিটে প্ল্যাটফর্মে যাত্রা করা, অ্যালার্ম চেন টানার অভিযোগে প্রায় ৬৫ জনের বেশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। এতে গত কয়েকদিনে প্রায় ৫৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষোভও দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দীপক দত্ত বলেন, ‘আরপিএফ বিনা কারণে প্ল্যাটফর্মে উঠলে মোটা অঙ্কের আর্থিক জরিমানা করছে। এতে রেল পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আরপিএফের অতিসক্রিয়তার ফলে স্টেশন এলাকায় ব্যবসা মার খাচ্ছে। এই বিষয়ে আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানাব।’