পিকাই দেবনাথ, কামাখ্যাগুড়ি: যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। এ প্রবাদ অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ করলেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) কামাখ্যাগুড়ির (Kamakhyaguri) মল্লিকা রায়। ইতিমধ্যে চুয়াল্লিশের গণ্ডি পার করেছেন। কিন্তু এখনও সংসার সামলে নিয়মিত অ্যাথলেটিক্সের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কামাখ্যাগুড়িতে তুলনামূলকভাবে ক্রীড়া পরিকাঠামোর যথেষ্ট অভাব। তার মধ্যেই চালাচ্ছেন নিয়মিত অনুশীলন। পদক জিতছেন নানা রাজ্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়।
শৈশব থেকেই তিনি অ্যাথলেটিক্সে পারদর্শী। ক্রীড়াক্ষেত্রে আগ্রহী করেন তাঁরই কাকা সুশীল রায়। স্কুলজীবনেই রাজ্য স্তরের একাধিক প্রতিযোগিতায় পদক জিতেছেন তিনি। এখনও স্কুলের চাকরি, সাংসার, ছেলের পড়াশোনা সামলে দৈনিক বিকালে বাড়ির কাছেই কামাখ্যাগুড়ি মিশন হাইস্কুলের মাঠে অনুশীলন চালিয়ে যান। গত বছর রাজ্য মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে লং জাম্পে প্রথম, ১০০ মিটার দৌড়ে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। চলতি বছর ৪৪তম ন্যাশনাল মাস্টার্স চ্যাম্পিয়নশিপে লং জাম্প ও ৪০০ মিটার দৌড়ে তৃতীয় হন। স্বামী শেখর রায় জানান, সংসার, ছেলের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য সামলে মল্লিকা যে অধ্যবসায়ে দৈনিক অনুশীলন করে ও নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পদক জেতে তা এককথায় অতুলনীয়।
মল্লিকা জানান, স্বামী ও ছেলে তাঁকে রীতিমতো উৎসাহ দেয়। তাঁর কথায়, ‘ছেলেবেলা থেকেই খেলাধুলো ভালোবাসতাম। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বাচ্চারা মোবাইলে আসক্ত। আমি চাই, বাবা-মা ও পরিবারের উৎসাহে ওরা মাঠে যাক। খেলাধুলোয় অংশ নিক। তবেই তরুণ প্রজন্ম বিপথে না গিয়ে সুস্থ জীবন ও সঠিক দিশায় পরিচালিত হবে।’ কামাখ্যাগুড়ির ক্রীড়া পরিকাঠামো নিয়ে তাঁর আক্ষেপ, ‘উন্নত পরিকাঠামো চাই। প্রশাসনের কাছে আবেদন অ্যাথলিটদের জন্য উপযুক্ত সিন্থেটিক মাঠ তৈরি করা হোক। শৈশবে ক্রীড়া সরঞ্জাম কিনতে সমস্যা হত। এখন চাকরির জন্য আর অসুবিধা হয় না। কিন্তু গ্রামের অ্যাথলিটদের সরকারি সুযোগসুবিধার প্রয়োজন। কামাখ্যাগুড়িতে বহু খেলোয়াড় পরিকাঠামোর অভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন।’