মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: জয়ন্তীর বাসিন্দারা আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা সদরের কাছাকাছি কোনও গ্রামেই পুনর্বাসন চাইছেন। ভুটিয়াবস্তি ও গাঙ্গুটিয়ার পর বক্সার কোর এলাকায় থাকা জয়ন্তী গ্রামকে ‘রিলোকেশনের’ ব্যাপারে বন দপ্তর উদ্যোগী হয়েছে। ওই গ্রামের ৪৪৯ জন উপভোক্তার মধ্যে ৪২৭ জন উপভোক্তা সরকারি পুনর্বাসন প্যাকেজে আগ্রহ প্রকাশ করে জয়ন্তী গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে বাসিন্দারা চাইছেন, আলিপুরদুয়ার শহরের কাছাকাছি কোনও সরকারি জায়গায় তাঁদের বসবাসের জমি দেওয়া হোক। ভুটিয়াবস্তি, গাঙ্গুটিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের আকর্ষণীয় আর্থিক প্যাকেজ সহ বসবাসের জন্য কালচিনির ভাটপাড়া চা বাগান সংলগ্ন বনছায়া মডেল ভিলেজ গড়ে তোলা হয়েছে। ওই এলাকায় সরকারি আরও জমি রয়েছে, যেখানে বক্সা টাইগার রিজার্ভের কোর এলাকায় থাকা আরও কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া যেতে পারে। তবে জয়ন্তীর গ্রাম ছাড়তে আগ্রহী বাসিন্দারা চাইছেন তাঁদের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা সদরের আশপাশের কোনও সরকারি জমিতে পুনর্বাসন দেওয়া হোক। বক্সা টাইগার রিজার্ভের ডিএফডি (ইস্ট) দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘বক্সার কোর এলাকায় থাকা জয়ন্তী গ্রামের ৪২৭ জন উপভোক্তা রিলোকেশনে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকারি প্রক্রিয়াও অনেকদূর এগিয়েছে। পুনর্বাসন প্যাকেজে বহু পরিবার এতে উপকৃত হবে। তবে তারা আলিপুরদুয়ার জেলা সদরের কাছাকাছি কোনও স্থানে পুনর্বাসন চেয়েছেন।’
মঙ্গলবার জয়ন্তী নদীর ধারে বাসিন্দারা জমায়েত হয়েছিলেন। জয়ন্তী বন গ্রামসভার সম্পাদক আশিস দে সহ গ্রামবাসীরা এদিন জয়ন্তী নদীর ধারে জমায়েত হয়ে রিলোকেশন নিয়ে নিজেদের মধ্যে একপ্রস্থ আলাপ-আলোচনা করে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও কাছে তাঁদের সদিচ্ছার কথা জানিয়েছেন। আশিস বলেন, ‘ভুটিয়াবস্তি ও গাঙ্গুটিয়াবস্তির বাসিন্দারা সরকারি প্যাকেজ পেয়ে অন্যত্র সরে গিয়েছেন। আমরাও জয়ন্তী গ্রাম ছেড়ে নিজেরাই অন্যত্র চলে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। কিছুদিন আগে ডোর টু ডোর ভিজিট করে উপভোক্তাদের প্রশাসন চিহ্নিত করেছে। কেউ কেউ বিভ্রান্তিকর প্রচার করছেন, আমাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে, কিন্তু সেটা একেবারের ভিত্তিহীন প্রচার। আমরা অধিকাংশ বাসিন্দারা নিজেরাই চাইছি, যত দ্রুত আমাদের জয়ন্তী গ্রামের বাইরে আলিপুরদুয়ারের কাছাকাছি কোনও জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হোক।’
জয়ন্তীতে (Jayanti) ৪৪৯ জন উপভোক্তা রয়েছেন। এর মধ্যে ৪২৭ জন অন্যত্র যেতে ইচ্ছা প্রকাশও করেছেন। আশিসের কথায়, আমাদের গ্রামে তিন মাস পর্যটনেরও ব্যবসা নেই। নিজেদের জমির পাট্টা কিছুই নেই। যে কোনও সময় গ্রামে জয়ন্তী নদীর জল ঢুকে গ্রামটাকেই উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে। অতীতে জয়ন্তীতে ডলোমাইট, নদী থেকে পাথর উত্তোলন করা হত। তাতে বহু মানুষের রুটিরুজি হত। এখন গ্রামে ভালো কাজ নেই, গ্রামের কর্মক্ষমরা ভিনরাজ্যে কাজ করে পরিজনদের মুখে খাবার জোগান।
স্থানীয় বাসিন্দা সোমা সিং বলেন, ‘জয়ন্তী গ্রামে কাজ নেই। পরিবারের লোকদের বাইরে কাজ করে সংসার চালাতে হয়। তাই আমাদের সরকারি প্যাকেজে পরিবারপিছু ১৫ লক্ষ টাকা ও বসবাসের জন্য ৮ ডেসিমাল করে জমি দেওয়া হলে, তাতে প্রত্যেক পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য ফিরবে।’ জয়ন্তীর বাসিন্দা ট্যুরিস্ট গাইড অমিত প্রসাদ বলেন, তিন মাস জঙ্গল সাফারি বন্ধ। এখানে থেকে এখন কোনও কাজ নেই, সংসার চালাতে কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। তাই সরকারি পুনর্বাসন প্যাকেজ আমাদের নিজেদের স্বার্থে প্রয়োজন। জয়ন্তীর বাসিন্দা রামচন্দ্র শা বলেন, ‘জঙ্গল বন্ধ, আমাদের বিকল্প কোনও কাজ নেই। তাই অন্যত্র সরে গেলে বিকল্প কাজও পাব।’
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালির খাবারের প্রতি টান অদম্য। আর তাতে যদি হয় চপ, সিঙারা…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: জেলবন্দি অবস্থাতেই আরও বিপাকে পড়লেন আপ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী…
অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: অবশেষে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে (Alipurduar Hospital) শুরু হতে চলেছে হাইব্রিড সিসিইউ (Hybrid…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রথের দিন জিলিপি খাবে না, এরম বাঙালি বোধহয় খুব কমই আছে।…
মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, রাঙ্গালিবাজনা: আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের খয়েরবাড়ি ও রাঙ্গালিবাজনায় একের পর এক মহল্লা…
মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: কোথাও কোমর, কোথাও বুকসমান জল (Flood Like Situation)। শোয়ার ঘর থেকে রান্নাঘর…
This website uses cookies.