ফালাকাটা ও পলাশবাড়ি: কোথাও তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। কোথাও ঘন ঘন লোডশেডিং। কোথাও আবার লো ভোল্টেজ। বেহাল বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে ফালাকাটা (Falakata) ও আলিপুরদুয়ার-১ (Alipurduar) ব্লকে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হচ্ছে। শুক্রবার সকালে ভুটনিরঘাটে ফালাকাটা-ধূপগুড়ি সড়ক প্রায় এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন স্থানীয় মহিলারা। দুপুরে ফালাকাটা-আলিপুরদুয়ার নির্মীয়মাণ মহাসড়কের মেজবিলে অবরোধ করা হয়। সেখানকার অবরোধে নেতৃত্ব দেয় সিপিএম (CPM)। দুই ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ দুই রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। আটকে পড়ে বহু যানবাহন। তবে দুই জায়গাতেই পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়।
এদিকে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের রিজিওনাল ম্যানেজার গোবিন্দ তালুকদার জানান, সম্প্রতি হওয়া ঝড়ের কারণে প্রচুর গাছ বিদ্যুৎবাহী তারের উপরে পড়ে যায়। অনেক জায়গায় তার ছিঁড়ে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটিও প্রচুর ভেঙেছে। তবে অধিকাংশ এলাকায় বৃহস্পতিবারের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক করা হয়। বাকি কিছু জায়গায় এদিনের মধ্যেই পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ফালাকাটা জয়চাঁদপুর এলাকার একশো বাড়িতে তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই বলে অভিযোগ। তাই মহিলারা এদিন সকাল থেকে ভুটনিরঘাটে অবরোধ শুরু করেন। আন্দোলনকারী স্বপ্না বর্মনের কথায়, বিদ্যুৎ দপ্তরের কোনও হেলদোল নেই। শিশু, বয়স্করা কষ্টে আছেন। তাই বাধ্য হয়ে পথ অবরোধ করা হয়। এদিকে অবরোধ চলাকালীন ধূপগুড়ি থানার পুলিশের একটি গাড়ি ফালাকাটার উদ্দেশে আসছিল। অবরোধস্থলে সেই গাড়িও আটকে যায়। খবর পেয়ে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার কর্মীদের নিয়ে অবরোধস্থলে আসে ফালাকাটা থানার পুলিশ। তাঁরা এদিনেই মধ্যেই পরিষেবা স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার-১ এর শালকুমার-১, শালকুমার-২ ও পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও বিদ্যুৎ পরিষেবা বেহাল। এজন্য সিপিএমের আলিপুরদুয়ার পশ্চিম ১ নম্বর এরিয়া কমিটির নেতৃত্বে এদিন পলাশবাড়ি থেকে মিছিল করে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার মেজবিল অফিসের সামনে আসেন নেতাকর্মীরা। কিন্তু আগে থেকেই তারিখ, সময় দেওয়া সত্ত্বেও এদিন মেজবিলের অফিসে দপ্তরের স্টেশন ম্যানেজার অনুপস্থিত থাকায় সিপিএম নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন৷ একই সময়ে কোচবিহার জেলার লাফাবাড়ি গ্রামের কিছু বাসিন্দাও অফিসে এসে বিক্ষোভ দেখান। মেজবিলের অফিসের আওতায় লাফাবাড়ি গ্রামেও তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই বলে অভিযোগ। তারপর বেলা দু’টা নাগাদ সিপিএমের সংশ্লিষ্ট এরিয়া সম্পাদক গুরুদেব বর্মন, এরিয়া সদস্য তপন বর্মন, অরবিন্দ রায়ের নেতৃত্বে মেজবিল বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়ক অবরোধ শুরু হয়।
দলের এরিয়া সম্পাদকের কথায়, ঘন ঘন লোড শেডিং, লোভোল্টেজ, প্রতি মাসে মিটারের রিডিং নেওয়া, উপভোক্তাদের হয়রানি, স্মার্ট মিটার বাতিল, বিদ্যুতের বিল কমানোর দাবিতেই এদিনের কর্মসূচি। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে তারিখ, সময় দেওয়া সত্ত্বেও এদিন অফিসে ছিলেন না স্টেশন ম্যানেজার। তাই বাধ্য হয়ে অবরোধ করা হয়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসে সোনাপুর ফাঁড়ির পুলিশ। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার মেজবিল অফিসের এগজিকিউটিভ অফিসার আব্দুল শাহজাহান আমিরের আশ্বাসে ৪০ মিনিট পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।