নাগরাকাটাঃ চাষ করা ভুট্টার সবটাই গেল হাতির পেটে। সঙ্গে তছনছ হয়েছে প্রচুর সুপারি গাছও। সব মিলিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার যোগার হয়েছে নাগরাকাটার আংরাভাসা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আপার কলাবাড়ির চাষিদের। এই নিয়ে এলাকায় এখন ক্ষোভের পারদ চরমে উঠেছে। হাতি নিয়ন্ত্রণে বন দপ্তর কিছু করছে না এমন অভিযোগেও সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। যদিও ডায়না রেঞ্জের রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, হাতির গতিবিধির প্রতি বন কর্মীরা নজর রেখে চলেছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবেন।
হাতির লাগাম ছাড়া অত্যাচারে এবছর আপার কলাবাড়িতে ভুট্টা চাষ কমই হয়েছে। তবুও যতটুকু জমিতে ভুট্টার ফলন হয়েছিল তার পুরোটাই গত ৭ দিনের মধ্যে সাবাড় করে ফেলেছে ডায়নার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা হাতির পাল। প্রায় ২০ বিঘা জমির ফসল শেষ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি দেখে কয়েকজন কৃষক আধা পরিণত কিছু ভুট্টা কেটে নিয়ে বাড়িতে রেখে দিয়েছিলেন। সেটাও ওই সব বাড়ি বেঁছে বেঁছে হামলা চালিয়ে সাবাড় করে হস্তীযূথ। লক্ষণ ছেত্রী নামে এক ভুট্টা চাষি বলেন, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। এভাবে পুরো জমিই যে হাতিতে সাফ করে দেবে তা কল্পনার ও অতীত ছিল। হাতির না হয় কিছু খাবার জুটলো। এবার আমাদের খাবার কে যোগাবে?
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন ভুট্টা শেষ করে দেবার পর এবার হাতির পালের নজর পড়েছে সুপারীর ওপর। একের পর এক বাড়ির সুপারি বাগান লণ্ডভণ্ড করে গাছের কান্ডের ভেতরের নরম অংশ খেয়ে ফেলছে ওই বুনোরা। বল্লারাম কাটোয়াল, দীপক ছেত্রী, লক্ষ্মীরাম মাঝির মতো আরো কয়েকজন দুটো টাকা রোজগারের আশায় সুপারি লাগিয়েছিলেন। গাছে ফল আশাও শুরু হয়েছিল। গোটা বাগান তছনছ হয়ে যাওয়ার পর মাথায় হাত তাঁদেরও। আপার কলাবাড়ির ভক্তে বাহাদুর ছেত্রী নামে এক শিক্ষক বলেন, কখনও দলছুট। আবার কখনো দু তিনটি হাতি একসঙ্গে এসে হামলা চালাচ্ছে। কৃষিকাজই এখানকার বাসিন্দাদের আয়ের প্রধান উৎস। যা অবস্থা তাতে বহু বাসিন্দা কিভাবে সংসার চালাবেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
আংরাভাসা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও ওই গ্রামেরই বাসিন্দা পার্বতী ছেত্রীর অভিযোগ, বন দপ্তর কে খবর দেওয়া হলেও তাঁদের সময়মতো দেখা মেলে না। আগের ক্ষতিপূরন অনেকে এখনও পান নি। আপার কলাবাড়ি সহ আশপাশের ১০-১৫ টি গ্রামকে বাঁচাতে পাশের ডায়না টোলগেট বিট অফিসে হাতি তাড়ানোর একটি স্কোয়াড গঠনের দাবির কথা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসলেও কারো কোন হুঁশ নেই।