কোচবিহার: কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তারি পরীক্ষায় নকলের ছড়াছড়ি। শুধু অভিযোগই নয়, প্রমাণিতও হচ্ছে বারবার। নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়া, খাতা বাতিল, সেই রাগে শৌচালয়ে ভাঙচুর, সিসিটিভি উধাওয়ের ঘটনা আগেই হয়েছে। তারপরেও পরীক্ষার্থীদের তেমন কোনও হেলদোল নেই। এখনও যে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে নকল সরবরাহ চলছে তার প্রমাণ মিলল বৃহস্পতিবার। এদিন পরীক্ষার হলঘরে ভিতরের একটি এসি’র পাইপের ভিতর থেকে নকল মিলেছে। যাকে কেন্দ্র করে মেডিকেলের অন্দরে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দেখা গিয়েছে, ওই পাইপের ভিতর ভূরিভূরি নকল জমা করা রয়েছে।
মেডিকেলের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডলের বক্তব্য, ‘পরীক্ষা শুরুর আগে ঘর খুঁটিয়ে দেখার সময় এসি’র পাইপের ভিতর থেকে কিছু নকল পাওয়া গিয়েছে। পরীক্ষার জন্য চারদিকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে এখন কেউ এখানে নকল রাখতে পারে বলে মনে হচ্ছে না। এই ঘরে আগে ক্লাস হত। তখন কেউ রেখে থাকতে পারে।’ তবে যখনই নকল রাখা হোক না কেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় যে দেদার টোকাটুকির প্রবণতা রয়েছে তা বারবার প্রকাশ্যে আসছে। এদিকে, মেডিকেলের শৌচালয়ে ভাঙচুর ও সিসিটিভি উধাওয়ের ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষের কথায়, ‘সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। সেজন্য আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।’
মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মাইক্রোবায়োলজির পেপার ওয়ানের পরীক্ষা ছিল। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি পরীক্ষার আগে সেই ঘরটি খুঁটিয়ে দেখে নেওয়া হয়। সেটি দেখতে গিয়েই কর্তৃপক্ষের কার্যত চোখ কপালে উঠে যায়। দেখা যায়, এসি’র পাইপের ভিতরে কিছু নকল রাখা রয়েছে। সেগুলি বের করা হলে দেখা যায় সেখানে কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষার নকল রাখা আছে। নকল সরবরাহ রুখতে কর্তৃপক্ষ এবারের পরীক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি। অনেকেই মনে করছেন, পরীক্ষার সময় নকল সরবরাহ করা কঠিন দেখে হয়তো কেউ আগে থেকেই সেখানে নকল মজুত করে রেখেছিল। যদিও কর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ। তাদের যুক্তি, আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। তাই এই নকলগুলি অনেক আগেই রাখা হতে পারে।
কয়েকদিন ধরেই এমজেএন মেডিকেলের ডাক্তারি পরীক্ষায় নকল ইস্যু নিয়ে উত্তাল। সোমবার এমবিবিএসের পরীক্ষায় দ্বিতীয় বর্ষের পাঁচজন পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল করে দেওয়া হয়। সেদিনই শৌচালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে একদল ছাত্রের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা উধাও হয়ে যায়। সেই ঘটনাগুলির রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নকল উদ্ধারের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।