ডালখোলা: ‘আমরা চাই সবুজ পৃথিবী’ এই বার্তাকে সামনে রেখে পাহাড় থেকে সমুদ্র পর্যন্ত পেছনে হেঁটে পদযাত্রা শুরু করেছেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ। এই বার্তা যাতে সাধারণের মধ্যে সাড়া জাগায় তাই তিনি নিয়েছেন অন্য পন্থাও। দার্জিলিং থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পথ তিনি অতিক্রম করবেন উলটো হেঁটে। চলতি মাসের ৪ তারিখে শৈল শহর দার্জিলিং ম্যাল থেকে উলটো হাঁটা শুরু করে সোমবার বিহার-বাংলা সীমান্ত শহর ডালখোলায় পৌঁছান সঞ্জিত কুমার দাস। হাতে ছোট আয়না পিঠ ব্যাগের একপাশে দেশের তেরঙা সহ প্রয়োজনীয় সামান্য কিছু সামগ্রী নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন এই বৃদ্ধ। তাঁর বাড়ি হুগলী জেলার ত্রিবেণিতে।
সঞ্জিতবাবু জানান, বহুজাতিক সংস্থার দীর্ঘ কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে পরিবেশ দূষণ রুখতে তাঁর এই যাত্রা প্রথম নয়। এর আগেও তিনি গঙ্গা দূষণ নিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করতে হেঁটেছেন প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার। এবার উলটো হেঁটে পথ চলতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছেন সঞ্জিতবাবু। পথ চলতি মানুষ তাঁর সঙ্গে সেলফি নিতেও ছাড়ছেন না। কেউ কেউ আবার তাঁর খাবার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। তিনি জানান, তাঁর এই সচেতনতা যাত্রার সম্পূর্ণ খরচ তিনি নিজেই বহন করছেন। কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে তিনি তা গ্রহণ করছেন।
সঞ্জিতবাবু জানান, বর্তমানে বিভিন্ন সময় নির্বিচারে বৃক্ষছেদন করা হচ্ছে, যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। যানবাহনের কর্কশ শব্দ ও বিভিন্ন সময় মানুষের বিনোদনের জন্য শব্দ দূষণ হচ্ছে। এছাড়া অপচনশীল প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আমরা অজান্তেই তা করে চলেছি নিত্যদিন। এসব বন্ধ না করলে আগামীতে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে বসবাস করা দুষ্কর হয়ে উঠবে। তাই সমাজের সব স্তরের মানুষকে সচেতন করতে তাঁর এই পথ চলা।
প্রতিদিন প্রায় ১৮ কিলোমিটার পথ উলটোভাবে হেঁটে চলেছেন তিনি। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৬ বা ১৭ ডিসেম্বরের তাঁর গন্তব্য গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছে যাবেন। তাঁর এই যাত্রার ফলে মানুষ এগিয়ে এসে যেদিন পরিবেশ বাঁচাতে গাছ লাগাবে সেদিনই তাঁর প্রচেষ্টা সফল হবে বলে জানান তিনি। তাঁর এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সমাজের গুণীজনেরা।