হলদিবাড়ি: দিনেরবেলা হালকা গরম পড়তে শুরু করেছে। আর তার সঙ্গেই হলদিবাড়িতে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে মশার উপদ্রব। যার জেরে অতিষ্ঠ শহরবাসী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে সন্ধ্যা নামতেই দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে শহরবাসীকে। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘কয়েল জ্বালিয়েও শান্তি নেই। রাতেও কানের পাশে পোঁ পোঁ শব্দে ঘুমের দফারফা হয়ে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ভয়ংকর কামড় তো রয়েছেই।’ সকলের আতঙ্ক এখনই এই পরিস্থিতি হলে আরও গরম বাড়লে তখন কী হবে!
এছাড়া মশার উপদ্রবের কারণে মানুষ ডেঙ্গি নিয়েও উদ্বেগে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে পুরসভা ডেঙ্গিমুক্ত রয়েছে। কিন্তু শহরের বাসিন্দারা মনে করছেন, এখন থেকেই মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হতে পারে। যদিও হলদিবাড়ি পুরসভার দাবি, ডেঙ্গি রুখতে তাদের কাছে সমস্ত সরঞ্জাম মজুত রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তা ব্যবহার করা হবে। হলদিবাড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান শংকরকুমার দাসের কথায়, ‘শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত নালা ও জমা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়ে থাকে।’
পুর নাগরিকদের অভিযোগ, শহরজুড়ে অপরিকল্পিত নিকাশিনালা ও অনিয়মিত আবর্জনা সাফাইয়ের কাজের জন্য সবসময় নালাতে দূষিত জল জমে থাকছে। এতে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। শহরের বাসিন্দা নমিতা দাসের ক্ষোভ, ‘পাড়ার সব নিকাশিনালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অপরিকল্পিতভাবে নালাগুলি তৈরি করার কারণে সেখান থেকে জল বের হওয়ার কোনও উপায় নেই। ফলে শহরের বিভিন্ন নিকাশিনালা মশার আঁতুড়ে পরিণত হয়েছে।’ সেইসঙ্গে বাসিন্দারা জানিয়েছেন কেবলমাত্র গরম পড়লে পুরসভার তরফ থেকে মশা মারার তেল স্প্রে করা হয়। কিন্তু তাতেও মশার অত্যাচার থেকে রেহাই মেলে না। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই মশার বাড়বাড়ন্ত এবং মশাবাহিত রোগ নিয়ে বাসিন্দারা শঙ্কিত।
শহরের বাস টার্মিনাস, থানা চত্বর, পিডব্লিউডি মোড়, কলেজপাড়া, দেশবন্ধুপাড়া, তালা কোম্পানি, পশ্চিমপাড়া, ইন্দিরা কলোনি, ক্ষুদিরামপল্লির মতো বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে। এলাকাবাসী চন্দন রায়ের কথায়, ‘প্রতি বছর দেখি মশার উপদ্রব কমানোর জন্য কত পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু তারপরেও কেন মশকবাহিনীর দাপিয়ে বেড়ানো রোখা যায় না সেটাই বুঝি না। এদিকে, এবছর এখনই যা পরিস্থিতি তাতে আমরা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছি।’ পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী পার্থপ্রতিম ধর জানিয়েছেন, নিকাশিনালা সহ শহরের আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। রুটিন মাফিক প্রতিটি ওয়ার্ডে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে।