সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: শুখা মরশুমেই ভেঙেছে নদী বাঁধ। এক বছরের মধ্যে এমনভাবে এই নদীবাঁধের ভাঙন নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। কেন নদী বাঁধ করতে গিয়ে রডের ব্যবহার করা হল না সেই প্রশ্ন উঠেছে। মূলত এমনভাবে অপরিকল্পিত বাঁধ গড়ে আসলে বছর বছর কাটমানি খাওয়ার রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি জেলা সভাপতির। যাঁরা এমন অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক বলেও দাবি তুলেছে বিজেপি।
বিজেপি (BJP) জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরীর দাবি, ‘এক বছর আগে যখন এই বাঁধ নির্মাণের কাজ হচ্ছিল, তখনই আমরা সেখানে বিক্ষোভ দেখিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবির কর্ণপাত না করে অপরিকল্পিতভাবে এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্ষায় এমন ঘটনা ঘটলে কত মানুষের প্রাণহানি হতে পারত।’
আত্রেয়ীর (Atreyee River) জল ধরে রাখতে নদী বরাবর তৈরি হওয়া দুই মিটার উচ্চতার ড্যামটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একবছরের মধ্যেই প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ড্যামের একাংশ ভেঙে পড়ে। গত রবিবার রাতে আত্রেয়ীর পশ্চিমপাড় অর্থাৎ চকভৃগুর দিকে ড্যামের পাশেই নির্মিত বাঁধ কংক্রিটের সিঁড়ি ভেঙে জলে তলিয়ে যায়। পরে নদীর উপর নির্মিত স্লুইস গেট ও ড্যামের লোহার কংক্রিটও ভেঙে পড়েছে। যা নিয়ে হইচই বালুরঘাট শহরে। আর এই বাঁধ নির্মাণের প্রক্রিয়া নিয়েই উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন।
একই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। তাঁদের মতে, বাঁধ নির্মাণের সময় থেকেই অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁরা। সেই সময় পুলিশ সহ নানাভাবে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এখন প্রমাণ হয়েছে সেদিন গ্রামবাসীরাই সঠিক কথা বলেছিলেন।
এদিকে আত্রেয়ী নদীর পশ্চিম প্রান্তে বালির বস্তা দিয়ে জল আটকানোর চেষ্টা শুরু হলেও, নদীর মাঝখানে থাকা বস্তাগুলি সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকালের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ শ্রমিককে কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। সেচ কর্তাদের মতে, আত্রেয়ী বাঁধ তৈরির সময় নদীর মাঝে রাখা হয়েছিল প্রচুর বালির বস্তার স্তূপ। তৈরি হয়ে যাওয়ার পর জল ছেড়ে দেওয়ায় ওই বালির বস্তাগুলি ডুবে গিয়েছিল। সেগুলো না সরানোর কারণেই পশ্চিমদিকে ক্রমশ বাড়ছিল জলের চাপ। সেই চাপেই বাঁধে এই বিপত্তি ঘটে।