উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আয়ুর্বেদিক পানীয় বিভিন্নরকম প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি, যা হজম থেকে বিপাকক্রিয়ার উন্নতিতে, ডিটক্সিফিকেশনে এবং সামগ্রিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই ধরনের পানীয় খেলে পেটের চর্বি অনেকটাই কমতে পারে। এমন দশটি আয়ুর্বেদিক পানীয়ের মধ্যে রয়েছে –
জিরাজল – জিরার মধ্যে শক্তিশালী বিপাক-বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সঞ্চিত চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে। সারারাত জলে জিরা ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে সেই জল খান। এতে হজমশক্তির যেমন উন্নতি হবে, তেমনই পেট ফঁাপা কমিয়ে দ্রুত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করবে।
জোয়ানজল – এটি চর্বি ঝরানোর পাশাপাশি হজমেও সাহায্য করে। খালি পেটে জোয়ানের জল খেলে বিপাকক্রিয়ার হার বাড়ে, হজমের উন্নতি হয় এবং অতিরিক্ত জলধারণ প্রতিরোধ করে। এছাড়া পেট ফাঁপা কমাতেও সাহায্য করে। ফলে সময়ের সঙ্গে পেটটাকে অনেকটা চ্যাপ্টা মনে হয়।
হলুদ দুধ – হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, যাতে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামাটরি এবং চর্বি ঝরানোর গুণ রয়েছে। রোজ রাতে উষ্ণ দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে তা বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
মেথিজল – ফাইবারে ভরপুর মেথিজল যেমন খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, তেমনি ওজন ঝরাতেও কার্যকরী। রাতে মেথি ভেজানো জল পরদিন সকালে খেলে তা হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে, পেট ফাঁপা কমায় এবং চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।
আদা-লেবু চা – আদা তার থার্মোজেনিক প্রভাবের জন্য পরিচিত, যা শরীরের অধিক ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে লেবু লিভারকে ডিটক্সিফাই করে। আদা-চা টক্সিন বের করার পাশাপাশি পেটের চর্বি কমায় এবং হজমশক্তির উন্নতি করে। খাওয়ার আগে এই চা খেলে তা খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
ত্রিফলাজল – ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকী, হরীতকী ও বহেড়ার সংমিশ্রণ। এটি হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে, বিপাকের উন্নতিতে সাহায্য করে। এই পানীয় ওজন ঝরাতে বেশ কার্যকরী।
দারুচিনির চা – দারুচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে এবং পেটে চর্বি জমা রোধ করে। শোয়ার আগে দারুচিনির চা খেলে তা খিদে কমাতে, বিপাক বাড়াতে এবং সঞ্চিত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
মৌরিজল – সারারাত মৌরি জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। মৌরিজল শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের শোষণের হার বাড়াতে সহায়ক। সেইসঙ্গে মেদ কমাতে সাহায্য করে।
ধনেজল – ধনেতে দ্রবণীয় ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি। ধনের জল খেলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে। বারেবারে খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
অ্যালোভেরা জুস – অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যালোইন নামে প্রোটিন, যা দেহে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। তবে অ্যালোভেরার জুস খুব অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত। এছাড়া গর্ভবতী মহিলা ও সদ্য মায়েদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এটি।
সুতরাং, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা করার পাশাপাশি তালিকায় এইসব আয়ুর্বেদিক পানীয় রাখুন, এগুলি স্বাভাবিকভাবে মেদ ঝরাতে তো বটেই, সামগ্রিক সুস্থতায় সাহায্য করবে।